
Truth Of Bengal: ৪১ বছর লেগে গেল সাজা ঘোষণা হতে। তবে যা মনে করা হয়েছিল সেই সাজা হল না। শিখ-বিরোধী দাঙ্গা মামলায় প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছে। মঙ্গলবার প্রাক্তন কংগ্রেস নেতাকে এই কারাদণ্ড দিয়েছে দিল্লির একটি বিশেষ আদালত। গত ১২ ফেব্রুয়ারি আদালত সজ্জন কুমারকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর সরকারি বাসভবনে নিজের দেহরক্ষীদের গুলিতে নিহত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি।
সেদিন থেকে টানা তিন দিন ধরে দিল্লিতে শুরু হয় শিখনিধন পর্ব। ১ নভেম্বর যশপাল ও নরেশ দক্ষিণ দিল্লির মহিপালপুরে একটি দোকানের মালিক ২৫ বছরের হরদেব সিংকে আক্রমণ করে। দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রাণ বাঁচাতে হরদেব পালিয়ে আশ্রয় নেন অবতার সিংয়ের বাড়িতে। ক্ষিপ্ত জনতা তাঁকে তাড়া করে সেই বাড়িতে যায় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। পুড়ে মারা যান হরদেব ও অবতার। দিল্লির ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় শিখ ধর্মাবলম্বী পিতা-পুত্র খুনে সজ্জন কুমার প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
সেই সময় দিল্লির রাজনগরের সাংসদ ছিলেন সজ্জন কুমার। ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আদালত সজ্জনের বিরুদ্ধে খুনের চার্জ গঠন করা হয়। সজ্জনের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানানো হয় আদালতে। বর্তমানে তিহার জেলে বন্দি সজ্জনের মানসিক অবস্থার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় আদালত। রিপোর্টে ৭৯ বছর বয়সী সজ্জনের বার্ধক্যজনিত সমস্যার কথা উঠে আসে। তাই সব দিক খতিয়ে দেখে দিল্লির ওই বিশেষ আদালত সজ্জনের মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছে। যদিও আদালতের এই রায়ে খুশি নন শিখ সম্প্রদায়ের একাংশ।
দিল্লি শিখ গুরুদোয়ারা ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জগদীপ সিং কাহলন বলেন, ‘সজ্জন কুমারের মতো একজনকে মৃত্যুদণ্ড না দেওয়ায় আমরা মর্মাহত। আমারা মনে করি তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যেত। তা হলে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারতাম। ৪১ বছর পর তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবুও ন্যায়বিচারের জয় হয়েছে। আমি আদালতের রায়কে সম্মান করি।’ এত বছর ধরে চলা সেই বিচারের অবশেষে নিষ্পত্তি হল। সাজা পেলেন সজ্জন কুমার।