দেশ

গদি বাঁচাতে নীতিশ-নাইডুর সঙ্গে রফা হয়, বাংলার বন্যার টাকা জোটে না

There is no money for flood control in Bengal

Truth of Bengal, ইন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়: কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের গদি বাঁচাতে বিহারের নীতিশ কুমার অন্ধ্রের চন্দ্রবাবু নাইডুর সঙ্গে অনৈতিকভাবে হাজার হাজার কোটি টাকার রফা হতে পারে, কিন্তু বাংলার বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য টাকা জোটে না। তাই বছরের পর বছর ধরে নদ-নদীগুলিতে পলি জমে নাব্যতা হারায়। ভাগিরথী, পদ্মা, কাঁসাই, দামোদর, দারকেশ্বরের মতো নদ-নদীগুলির ক্ষেত্রে ড্রেজিং হয় না।

তাই ফি বছর বন্যা হয়, ডিভিসির ছাড়া জলে। লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘরছড়া হয়। হাজার হাজার একর কৃষিজমি জলমগ্ন হয়, ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফসলের। এবারও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। ব্যাতিক্রম হল, এবারে ডিভিসির ছাড়া জলের মাত্রা অনেক বেশি। ২০০৯ সালের পর সব রেকর্ড ভেঙেছে ডিভিস, যা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখ করেছেন সংবাদ মাধ্যমের কাছে। সামান্য ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে এই পরিস্থিতি ঘটেনি।

ঝাড়খণ্ডের জল প্লাবিত করেছে বাংলাকে। যেখানে প্রায় ৪৫ লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। এ প্রযন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হল যে, কেন্দ্রের এ ব্যাপারে কোনও হেলদোল নেই। যত দায় যেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি তাঁর সাধ্যমতো মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। জীবনকে বাজি রেখে বন্যা দেখতে হাঁটু জলে হেঁটেছেন। মানুষের পিছনে দাঁড়িয়েছেন। যথাযোগ্য ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছেন।

ভোটে জেতা বিজেপির ১২ জন সাংসদ, যার মধ্যে কেউ কেউ আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভত্রার সদস্যও। তাঁদের কি বাংলার মানুষের প্রতি কোনও দায়বদ্ধতা নেই? বাংলার মানুষের ভোটে জিতবেন, আবার তাঁদের বিপদে-আপদে পাশে থাকবেন না, এটা কী করে হয়। উলটে টিভির পর্দায় নাটক করবেন, বাংলার বিরোধিতা করবেন চ্যানেলের অ্যাঙ্কার রসিয়ে রসিয়ে আপনাদের খোঁচা দেবেন, আর আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রাদ্ধ করবেন তাতে বন্যাদুর্গতরা আগামী দিনে আপনাদের কোলে তুলে নাচবেন তাই সব ভোট আপনাদের।

এই ভাবনাই বোধহয় আপনাদের মগজে। আর যে সব চ্যানেল তথাকথিত বিরোধীদের এত হাইলাইট করছে, আদতে তারা মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই কবর দিচ্ছে। এক কথায় এই সব চ্যানেলগুলি নিজেদেরও বিজেপি-সহ বিরোধীদের মতামতকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন, গুরুত্ব দিচ্ছেন না মানুষের মতামতকে। সে কারণেই ওই সব টিভি চ্যানেলগুলির কথা মানুষ বিশ্বাস করতেন তা হলে বাংলায় তৃণমূল যেমন ভাল ফল করত না, তেমনই বিজেপির কেন্দ্রে এহেন দশা হত না। বিজেপির শেখানো বুলি যে এই ধরনের টিভি চ্যানেলে সম্প্রচার হচ্ছে, তা প্রমাণিত। স্বভাবতই তাদের নিরপেক্ষতাও আজ প্রশ্নের সম্মুখীন।

Related Articles