শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার অভিযোগ জুনিয়র ডাক্তারদের
The junior doctors accused Shuvendu of tarnishing the movement

Truth Of Bengal : তাদের আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার এমনই অভিযোগে স্বরূপ হলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। শুক্রবার স্বাস্থ্য ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলনস্থল থেকে জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, তাদের আন্দোলনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চাইলে তারা প্রতিক্রিয়া জানাবেন। এর পাশাপাশি বৃহস্পতিবার নবান্নের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়েছেন তারা। এরপরে তারা বলেন, তারা কোনদিনই মুখ মন্ত্রীর পদত্যাগ চাননি। কারণ তারা ‘চেয়ার’ কে যথেষ্ট সম্মান করেন।
স্বাস্থ্য ভবনের কাছে মঙ্গলবার অবস্থান বিক্ষোভ করছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। অভিযোগ সেখানে বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালকে দেখে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়। তবে বিজেপি নেত্রীর দাবি তিনি নাকি ওই পথ দিয়েই বিজেপির দফতরে যাচ্ছিলেন। তার আগে ফিয়ার্স লেনে আন্দোলনকারীদের সভার স্থলে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখা গিয়েছিল। সেখানেও চিকিৎসকেরা বিজেপির সাংসদকে দেখে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, এই স্লোগান নাকি জুনিয়ার ডাক্তারদের নয়। কিছু ‘বহিরাগত’ এই স্লোগান দিয়েছেন। যারা গাঁজা এবং মাদকাসক্ত। শুভেন্দু এই যুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দেন জুনিয়ার চিকিৎসকেরা। শুক্রবার তারা জানান, তারা নিজেরাই এই স্লোগান তুলেছিলেন। আন্দোলনকারীদের কথায়, ‘‘যাঁরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমাদের আন্দোলনকে ব্যবহার করতে চেয়েছেন, প্রথম থেকেই আমরা তাঁদের বিরোধিতা করেছি। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বা অগ্নিমিত্রা পালের মতো নেতা-নেত্রীকেও আন্দোলনের মঞ্চ থেকে গো ব্যাক স্লোগান শুনতে হয়েছে।’’ এর পরেই আন্দোলনকারীরা সরাসরি আঙুল তোলেন শুভেন্দুর দিকে। তাঁদের কথায়, ‘‘বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আমাদের আন্দোলনকেই কালিমালিপ্ত করতে নেমেছেন। এই ঘটনা (গো ব্যাক স্লোগান) নাকি দুশ্চরিত্র বহিরাগতের ষড়যন্ত্রের ফলে ঘটেছে। আমরা সুস্পষ্ট ভাবে তাঁকে এবং অন্য যাঁরা আমাদের আমাদের আন্দোলনকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে ব্যবহার করতে চান, তাঁদের বলতে চাই, এই নিয়ে আগেও যা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলাম, আবার একই জানাব।’’
এদিকে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নবান্নে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল আন্দোলনকারীদের। কিন্তু সেই বৈঠক পরবর্তীকালে ভেস্তে যায়। এ প্রসঙ্গে শুক্রবার আন্দোলনকারীরা জানান, তারা এই বৈঠক নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী ছিলেন। কারণ তাদের এই আন্দোলন শুধুমাত্র চিকিৎসকদের নয়, সাধারণ মানুষদেরও। এরপর নবান্নের তরফে বিকেল পাঁচটায় ঢাকা বৈঠকে আন্দোলনকারীরা দেরিতে পৌঁছানো প্রসঙ্গে জানান, ‘‘৪৫ মিনিট দেরিতে গিয়েছিলাম আমরা। তার জন্য ক্ষমা চাইছি। আমরা ৩৪ দিন ধরে রাস্তায় রয়েছি। তাই আশা করছি, ওই দেরি ক্ষমা করে দেবেন।’’
আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল এই বৈঠক যেন সরাসরি সম্প্রচার হয়। কিন্তু এই শর্ত না মানায় অবশেষে বৈঠক ভেস্তে যায়। আন্দোলনকারীরা জানান, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে প্রশাসনিক বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার করেন। তাই এ ক্ষেত্রেও আইনভঙ্গের কিছু দেখিনি। আমরা যে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম, তার মধ্যে সব বিচারাধীন নয়। আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টি তো বিচারাধীন নয়! তা ছাড়া, সরাসরি সম্প্রচার হলে নির্যাতিতার বাবা-মাও তা দেখতে পেতেন।’’
বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তিনি ইস্তফা দিতে রাজি। বিচার নয়, আসলেই চেয়ার চাওয়া হচ্ছে। এপ্রসঙ্গে আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘‘আমরা চেয়ারকে সম্মান করি। পদত্যাগ আমরা চাইনি। আমাদের একটাই চেয়ার, হাসপাতালের ওপিডির চেয়ার।’’