ভ্রমণ

টেরাকোটার সন্ধানে মন্দিরনগরী

Temple city in search of terracotta

Truth of Bengal: টেরাকোটা মন্দিরের টানে বছরের অধিকাংশ সময়ে কালনায় আসেন বহু পর্যটক। এই কালনায় অপূর্ব টেরাকোটার মন্দিরের মধ্যে অন্যতম মন্দির অবস্থিত যার নাম প্রতাপেশ্বর মন্দির। মন্দিরের ভিতরে রয়েছে ৪ ফুট উচ্চতার কৃষ্ণ বর্ণের শিবলিঙ্গ। মন্দিরের অসাধারণ টেরাকোটার কাজ আকর্ষণ করে দর্শকদের। শ্রীচৈতন্যের হাত ধরেই রাজ্যের সর্বত্র খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে মন্দিরনগরী কালনার। এই শহরে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যের আগমন ঘটেছিল ষোড়শ শতকে। বর্ধমান মহারাজের হাত ধরে আঠারো থেকে উনিশ শতকের মধ্যে কালায় অধিকাংশ মন্দির নির্মিত হয়।

এইরকমই কানলার মধ্যে অবস্থিত টেরাকোটার অপূর্ব কাজ করা মন্দির হল প্রতাপেশ্বর মন্দির। এই মন্দির মন্দিরনগরী কানলার ১০৮ টি শিবমন্দিরের বিপরীতে অবস্থিত। কানলায় যে রাজবাড়ি রয়েছে সেই রাজবাড়ির মন্দির চত্বরে এসে সামনে দেখতে পাবেন একটি মাঝারি আয়তনের কামান। আর সেই কামান পেরলেই চোখের সামনে দেখবেন প্রতাপেশ্বর দেউল মন্দির। এই মন্দিরকে অনেকে বলে থাকেন জলেশ্বর মন্দির।

মন্দিরের উপরের অংশটি খাঁজকাটা গম্বুজের মতো, সমান্তরাল এই মন্দিরের ভিতরে রয়েছে সাড়ে ৪ ফুট উচ্চতার কৃষ্ণ বর্ণের শিবলিঙ্গ। মন্দিরের নিচের দিকের অংশ ছোট ছোট টেরাকোটার অসাধারণ নকশা করা। এই মন্দিরের উচ্চতা ৪৫ ফুট। এই মন্দির স্থাপিত হয়েছিল ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে। এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রতাপচন্দ্রের প্রথমা পত্নী প্যারি কুমারী দেবী তার স্বামীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে। এই মন্দিরের ৪ দিকেই রয়েছে খোলা বারান্দা।

এই মন্দিরের গায়ে টেরাকোটার কাজ দেখে অবাক হওয়ার জোগাড়। মন্দিরের দেওয়ালে টেরাকোটার কারুকার্য যেন কোন গল্প বলতে চাইছে। এই মন্দিরের ৪ দিকে রয়েছে ৪ টি দরজা। সামনের দরজা দিয়েই কেবল ভিতরে প্রবেশ করতে পারা যায়। বাকি ৩ টি দরজা হল নকল। ৪ দরজার মাথার উপর রয়েছে টেরাকোটার প্যানেল।

প্যানেল গুলির মধ্যে যে নকশা আছে সেগুলি রাম সীতার অভিষেক, দেবী দুর্গার অকালবোধন ও রাম রাবণের যুদ্ধ সুন্দর ভাবে নির্মিত করা হয়েছে। ভাবছেন যাবেন কিভাবে? হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে ট্রেন ধরে অম্বিকা কালনা স্টেশন। স্টেশন থেকে টোটো ভাড়া করে ঘুরে দেখে নিন কানলা শহর সহ কানলার প্রতাপেশ্বর দেউল মন্দির।

Related Articles