বিধানসভায় বুদ্ধদেবকে শেষ শ্রদ্ধা,শাসক-বিরোধী দুই শিবিরেই শোকাহত
Last respects to Buddhadeb Bhattacharjee in the Assembly

The Truth of Bengal: শববাহী শকেটের চার কোণে চারটি লাল পতাকা। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা আর লাল গোলাপের মালায় ঢাকা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দেহ বেলা এগারোটা নাগাদ নিয়ে যাওয়া হয় বিধানসভায়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানান স্পিকার বিমান বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়,সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রী মলয় ঘটক,অরূপ বিশ্বাস,ফিরহাদ হাকিম।বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনরা।গণতন্ত্রের পীঠস্থানে সব মতাবলম্বী মানুষের এক বিষাদঘন সমাবেশ দেখা যায়। রবীন্দ্রনাথ অনুরাগী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রয়াত হন তেইশে শ্রাবণ। ঠিক রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ দিবসের পরেরদিন। আর চব্বিশে শ্রাবণ বঙ্গ রাজনীতির সমাজবাদী দর্শনও ভাবনার দিশাদানকারী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন রাজনীতি ও প্রশাসনের ব্যক্তিত্বরা। গণতন্ত্রের উপাসনালয় বিধানসভায়,শাসক-বিরোধী একযোগে সম্মান প্রদর্শন করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। একফ্রেমে বাঁধা পড়ে গণতন্ত্রের সব মতও মতের বিশ্বাসী নেতা ও প্রতিনিধিরা।
সাড়ে ১৩বছর পর শুক্রবার বিধানসভায় আসে তাঁর নশ্বর দেহে। বরাবরই বুদ্ধবাবু বলতেন,বিরোধীদের কথা শুনে চলাই গণতন্ত্রের গৌরব। ডিসেন্সি অব ডেমোক্রাসির কথা বলা সেই বুদ্ধদেবই যেন শাসক-বিরোধীকে এক সরণিতে দাঁড় করালেন।শুক্রবার ঠিক বেলা এগারোটা নাগাদ বিধানসভায় নিয়ে আসা হয়। শববাহী শকেটের চার কোণে ছিল ৪টি লাল পতাকা।চোখে কালো ফ্রেমের চশমা আর লাল গোলাপের মালায় ঢাকা বুদ্ধবাবু আলাদা সম্ভ্রম আদায় করে নেন। বুদ্ধদেবের শেষ যাত্রায় সামিল হন বাম ফ্রন্টের নেতৃত্ব। বিধানসভায় পৌঁছতেই বুদ্ধবাবুর দেহের সামনে এসে দাঁড়ান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে নীরবে শেষ শ্রদ্ধা জানান তৃণমূল সাংসদ। বুদ্ধবাবুর পরিবার এবং দলের সহযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলেন বিরোধী দলনেতা। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষশ্রদ্ধা জানান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল–বিজেপির বিধায়করা।
মন্ত্রী মলয় ঘটক,অরূপ বিশ্বাস,ফিরহাদ হাকিম তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। বুদ্ধবাবুর মরদেহে মাল্যদানের পর মীরা ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথা বলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডিজি, পুলিশ কমিশনার। পুরোপুরি নীরবতা লক্ষ্য করা যায় তখন বিধানসভায়।শেষ যাত্রায় সামিল বুদ্ধবাবুর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য এবং সন্তান সুচেতনকেও সমবেদনা জানাতে দেখা যায় সকলকে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী তাঁর লড়াই –সংগ্রামের কথা তুলে ধরে জানান,বাংলার মানুষের মন বুঝতেন তিনি। আগামীদিনে সিপিএম নেতৃত্ব বুদ্ধবাবুর লড়াই- সংগ্রামের গাইডলাইন ও মূল্যবোধকে সামনে রেখে রাজনৈতিক সংগ্রামের দিশা পেতে চায় বলে জানিয়েছেন।বাংলার রাজনীতিতে তিনি না থেকেও যে থেকে যাবেন তা একবাক্যে মেনে নিচ্ছেন শাসক-বিরোধী সব শিবিরের নেতাও জনপ্রতিনিধিরাই।