রাজ্যের খবর

বস্তির বাসিন্দা মোগলের বেগম, ফিল্ম তৈরি করলে অর্থ নিতে চান, মমতার সাহায্য পেয়ে আপ্লুত

Mughal Begum, a slum dweller, wants to get paid if she makes a film, is overwhelmed by Mamata's help

The Truth of Bengal : কথায় বলে,উথ্থান –পতন প্রকৃতির নিয়ম। আর সেই কালের নিয়মেই অস্তাচলে চলে গেছে মোগল সামাজ্য। সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের রাজছত্র চলে গেছে। এখন রয়েছেন তাঁর বংশধর,বেগম সুলতানা। রাজকীয় মেজাজ এখনও  রয়ে বেড়ান বেগম সুলতানা । হাওড়ার ফোরশোর রোডের  বস্তির ঘরে থাকেন তিনি। আলো খুব কম ঢোকে, ফোনের নেটওয়ার্ক  বেশির ভাগ সময়েই থাকে না।  একটানা   হাঁটতেও পারেন না তিনি। শরীরের নানা অংশের মতোই হাঁটুর যন্ত্রণা বেড়েছে।   কিন্তু উপায় নেই।ঘিঞ্জি এলাকায়   জল-কাদা পার হয়ে এখনও  রাস্তার কল থেকে জল আনতে হয় মোগল বংশের ‘বর্তমান’ বেগমকে। যিনি কিনা মোগল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের বংশধর।তাঁকে নিয়ে পরিচালক সৌম্য সেনগুপ্ত সিনেমা তৈরি করতে চান। আগেও তাঁকে নিয়ে তথ্যচিত্র হয়েছে। এখন সেই বেগমই চান লালকেল্লার ভাগ।দিল্লি হাইকোর্ট পত্রপাঠ তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়। তবুও তিনি আইনি লড়াই জারি রাখতে চান। চান অধিকার আদায়ের সংগ্রাম নতুন করে শুরু করতে। বাংলা জাগোর সামনে অকপট সেকথা জানান সম্ভ্রান্ত পরিবারের পুত্রবধূ। একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় তাঁর প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের পরে তাঁকে ‘হিন্দুস্থানের স্বাধীন বাদশাহ’ ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই ইতিহাস অনেকের জানা থাকলেও বাদশাহের উত্তরসূরিদের খোঁজ রাখে না কেউ। সেই কারণেই সুলতানাকে নিয়ে ছবি বানানোর ভাবনা রয়েছে কারুর কারুর।আগামীদিনে তাঁকে নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি হলে অর্থ দিয়েই তা করতে হবে বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন বেগম। খুব তাড়াতাড়িই শুটিং শুরু করার ইচ্ছা আছে তাঁর।  হাওড়াবাসী সুলতানা   বলেন, হাঁটুর ব্যথায় এখন ওঠাবসাও কষ্টের। হাতে কিছু টাকাপয়সা এলে চিকিৎসা করিয়ে আবার মামলা করবেন। নতুন আইনজীবী নেওয়ারও ইচ্ছা রয়েছে।তাঁর হকের জায়গা ফিরে পাওয়ার লড়াই নতুন উদ্যমে শুরু করতে চান বেগম।

স্বামীর মৃত্যুর পরে কখনও চুড়ি তৈরির কারখানায়, কখনও দিনমজুর হিসাবে, কখনও চায়ের দোকানেও কাজ করেছেন। এখন  পেনশনের অল্প টাকা থেকেই কিছু কিছু জমাচ্ছেন সুলতানা। তিনি হৃত গৌরব বজায় রাখার যুদ্ধে জয়ী হতে মরিয়া।