রাজ্যের খবর

একদিনের বিচারক! অভিযোগ শুনে বিচার করলেন ৫ বছর বয়সে মা-বাবা পরিত্যক্তা হোম বালিকা

One day judge! After hearing the complaint, the girl was abandoned by her parents at the age of 5

The Truth Of Bengal :  শান্তনু পান, পশ্চিম মেদিনীপুর :- পুরো নাম মৌসুমী মুর্মু,পাঁচ বছর থেকেই মা-বাবা পরিত্যক্ত এবং তখন থেকেই হোমেই জীবন যাপন কাটাচ্ছে বর্তমানে একুশ বছর বয়সী নার্সিং ফাস্ট ইয়ার ছাত্রী এই মৌসুমী। তবে যে নিজের মা-বাবার কখনো সঙ্গ পায়নি সে আজ বিচার করলো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিচারক হিসেবে। এরকমই ঘটনা মেদিনীপুর জেলা আদালতে।ঘটনা ক্রমে জানা যায় এদিন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জেলা আদালতে DLSA এর তরফে বসেছিল দ্বিতীয় লোক আদালত। যে লোক আদালতে স্থানীয় মানুষজন যাদের যাদের টাকা দিয়ে মামলা চালানোর মত সামর্থ্য নেই সেসব মানুষ এসেছিলেন নিজের মামলা নিষ্পত্তি করতে।

এই দিন প্রায় ১৪ হাজার মামলা মোকদ্দমা উপস্থাপিত হয় এই লোক আদালতে। আর তাতেই বিচারকের ভূমিকায় দেখা গেল এই হোম বালিকা মৌসুমী মূর্মুকে। কে এই মৌসুমী মুর্মু ? ঘটনাক্রমে বলতে গিয়ে বলা যায় যখন তার পাঁচ বছর বয়স তখন তার মা-বাবা কৃষ্ণনগরের একটি পরিত্যাক্ত জায়গায় ফেলে দিয়ে আসে তাদের মৌসুমীকে। এরপর ওখানকার পুলিশ মারফত মৌসুমীর ঠাঁই হয় হোমে।দীর্ঘ সাত বছর হোমে থাকা এবং লড়াই করার পর ১২ বছর যখন তার বয়স তখন সে মেদিনীপুর হোমে চলে আসে বদলি হয়ে। এরপর মেদিনীপুর হোমে পড়াশুনা পড়াশোনার পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিকের পর নার্সিং ফার্স্ট ইয়ারে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া। এরই মধ্যে এই অনগ্রসর সম্প্রদায়ভুক্ত এই মৌসুমী মূর্মু হঠাৎ্ই লেটার পান মেদিনীপুর জেলা আদালত থেকে।

যেখানে তার এই DLSA এর লোক আদালতে ডাক পড়ে বিচারক হিসেবে। প্রথমে চিঠিটি পেয়ে কিছুটা হতভম্ব এবং ভীত হয়ে পড়ে এই মৌসুমী। কিন্তু পরে আদালতের সাহেবদের তত্ত্বাবধানে মৌসুমী চলে আসে মেদিনীপুর কোর্টে।এদিন সকাল থেকে প্রায় দুপুর পর্যন্ত শতাধিক কেস সে দেখল নিজের হাতে, শুনলো অভাব অভিযোগ এবং দিলেন পরামর্শ। এরই সঙ্গে সমাধান করলেন দীর্ঘদিন চলে আসা মামলা মোকদ্দমার। এইদিন মৌসুমী SC ST Atrocities Act এর অধীন special Court এ বসে গাড়ি দুর্ঘটনার বীমা সংক্রান্ত মামলা গুলো খতিয়ে দেখেন। তবে অবসর টাইমে মৌসুমী গান শুনতে ভালোবাসে, পড়তে ভালোবাসে যে কোন বই। তার বড় হয়ে ইচ্ছে নার্সিং স্টাফ হওয়া। যা নিয়ে মেদিনীপুর কোর্টে রীতিমতো উৎসাহ ছড়িয়ে পড়ে।

Related Articles