রাজনীতি

বিরোধীদের আর্থিকভাবে দুর্বল করার রাজনীতি, চব্বিশের চর্চায় মূল ফোকাস বিজেপির ‘দমনপীড়ন’

Politics of financially weakening the opposition

The Truth of Bengal: বিরোধীদের আর্থিক দিক দিয়ে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।নানা কায়দায় কংগ্রেসের আর্থিক সম্পদে থাবা বসানো হচ্ছে। বিজেপির সরকারের রাজনীতি নিয়ে  সবমহলে কাঁটাছেঁড়া চলছে। শুধু কংগ্রেসই নয়, বাম সহ অন্যান্য বিরোধী দলের নেতারাও কেন্দ্রীয় নীতির কড়া সমালোচনা করছে।সবমহলের আশঙ্কা,শাসকদল ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে অর্ধেকের বেশি অর্থলাভ করায় এখন বিরোধীদের দুর্বল করার নতুন কৌশল নেওয়া হচ্ছে বলে ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা মনে করছেন। ভোটের লড়াই  করতে গেলে প্রয়োজন হয় অর্থ।অর্থবলে বলিয়ান না হলে ভোটের বিপুল ব্যয়ভার রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষে সামলানো অসম্ভব।কিন্তু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থ আসবে কোথা থেকে ? কে ব্যয় করবে নির্বাচনের খরচ? একথা মাথায় রেখেই ২০১৭তে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এই নির্বাচনী বন্ড চালু করেন। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো ঘুরপথে শিল্প সংস্থার মাধ্যমে অর্থ লাভ করেছে।দেখা যাচ্ছে,নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিজেপি একাই পেয়েছে ৬হাজার ৯৮৬কোটি টাকার বেশি।

বাকি টাকা অন্যান্য দলের ভাঁড়ারে জমা পড়েছে। রাজনীতিক দলগুলোর সেই আর্থিক সাহায্য লাভের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক যখন জোরদার হচ্ছে তখন বিরোধীরা আরও গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরে শোরগোল ফেলছে।  বিরোধীদের বড় ফোকাস ,অর্থশক্তিতে কিভাবে দুর্বলতর করে চলেছে কেন্দ্রের শাসকদল। কিভাবে বিরোধীদের আর্থিক মেরুদন্ড  ভেঙে দেওয়া হচ্ছে তার তথ্য-পরিসংখ্যানও চব্বিশের ভোটের আগে দেশবাসীর সামনে পেশ করছে অবিজেপি দলগুলো। এরমধ্যে আয়কর দফতর কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে বলে অভিযোগ।লাগু করা হয়েছে আর্থিক জরিমানাও।১৮০০কোটি টাকার নোটিশ পাঠানোর পর আরও ২টি নোটিশ মেলায় কংগ্রেস বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।বাম সহ অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলোর ওপরও আয়করের নোটিশ চাপিয়ে দিয়ে আর্থিকভাবে তাঁদের ব্যাকফুটে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে বলেও ইন্ডিয়া জোট মনে করছে।

ভোটের খরচ থেকে আনুষাঙ্গিক নানা ব্যয়ের জন্য বিপুল অর্থের যে প্রয়োজন হয় তা কোথা থেকে আসবে তাই নিয়ে গণতন্ত্রের মূল চালিকাশক্তি আমজনতার কাছে সেই প্রশ্ন তুলে ধরছে বিরোধী শিবির।ফলে স্পষ্ট এবারের নির্বাচনে এজেন্সি দিয়ে হেনস্থা,প্রার্থীদের প্রচারে বিঘ্ন ঘটানোর মতোই এই আর্থিকভাবে দুর্বল করার রাজনীতিও ভোটের  বিশ্লেষণে উঠে আসছে। যাঁরা অতীত রাজনীতি দেখেছেন,তাঁদের কাছে ১৯৭৫-র জরুরি অবস্থা এখনও ভয়ঙ্কর বলে মনে হয়।কারণ বিরোধীদের কণ্ঠরোধ থেকে মুক্ত মত প্রকাশে অধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্য কংগ্রেসকে এখনও খোঁচা শুনতে হয়।শোনা যায়,জরুরি অবস্থার জন্য ইন্দিরা গান্ধীর মনে অনুশোচনা হয়েছিল।ভুল বুঝতে পেরে কংগ্রেস আর সেইপথে যাবে না বলে কথা দিয়েছে।এখন সেই কংগ্রেসই অঘোষিত  আর্থিক জরিমানা বা আর্থিক কোণঠাসা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে মুখর।কেউ কেউ তাই বলছেন এটাই রাজনীতির পরিহাস।একদিন হয়তো বর্তমান শাসকদেরও এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।

Related Articles