শিক্ষা

উচ্চমাধ্যমিকের সময় মাকে হারানো, বাবার চাকরি ত্যাগ, দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে GSI অফিসার অর্পিতা

GSI officer Arpita after a long struggle after losing her mother during high school, father leaving her job

The Truth Of Bengal: ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল অন্য কারোর পরিচয় নয়, নিজের পরিচয়ে স্বাধীনভাবে বাঁচার। স্বপ্ন ছিল সবার থেকে আলাদা কিছু করে দেখানোর। নিজেকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যেখানে সমাজের নানান সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়। তাই স্নাতক এবং MSC পাশের পরেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলেন ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসবেন। এরপর শুরু হল ইউপিএসসি পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি পর্ব। দিনরাত এক করে শুরু করলেন পড়াশুনা। এরপর প্রথম বার পরীক্ষায় বসে অসফল হওয়ায়, হার না মেনে ফের দ্বিতীয়বারের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন তিনি। এরপর সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ৩৬ র‍্যাঙ্ক করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন বঙ্গ কন্যা অর্পিতা সিংহ।

বাঁকুড়ার চাপাতোড়া সরস্বতী শিশু বিদ্যামন্দির থেকে বাকি সেন্দরা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন তিনি। এরপর বাঁকুড়ার মিশন গার্লস স্কুলে পাঠরত থাকাকালীন মা কে হারায় এই লড়াকু ছাত্রী। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেই কলকাতার যোগমায়া দেবী কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক স্তরের ভর্তি হয় মেধাবী ছাত্রী। পরবর্তীকালে বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির থেকে MSC পাশ করেই ইউপিএস এর জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন তিনি। এরপর ২০২০-২০২১ সালে পরীক্ষায় বসে সাফল্য না পাওয়ায় ২০২২ সালে ফের UPSC পরীক্ষায় বসে অবশেষে জিও সাইন্সে সফল হয় অর্পিতা।

বর্তমানে অর্পিতা জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াতে উচ্চপদে রয়েছেন। অর্পিতা বলেন, ” আয়রণ ম্যান নিজের পরিশ্রমের ফল পেয়েছেন। গড গিফ্টেড নন। আমিও এইভাবেই পরিশ্রম করে নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে দিতে চেয়েছি। পরিশ্রম করলে এক না এক দিন তার ফল পাওয়া যাবেই।”

ছোটবেলা থেকেই আইরন ম্যানের অন্ধভক্ত ছিল অর্পিতা। কিন্তু এইসবের জন্য কোনদিনও পড়াশোনার কোনো ক্ষতি করেননি এই দরিদ্র ছাত্রী। বাঁকুড়া জেলার বাঁকুড়া দু’নম্বর ব্লকের সানবাঁধা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভূতেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা অর্পিতা। সেখানে ছোট্ট একটি বাড়িতে বাবা, দিদি, জেঠু জেঠিমা এবং বৃদ্ধা ঠাকুমার সঙ্গে বাস ছিল তার। বাবা অনুপ সিংহ বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। কিন্তু পরবর্তীকালে নিজের মেয়ের মত যাতে আরো মেয়েরা নিজেদের স্বপ্ন পূরণের জন্য এগিয়ে আসে সেজন্য গ্রামের বাড়িতে বিনামূল্যে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানো শুরু করেছিলেন অনুপ।

Related Articles