
The Truth of Bengal: নাগাল্যান্ড এবং মণিপুর রাজ্যের সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থিত জুকু উপত্যকা। পূর্ব-ভারতে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দু হাজার মিটারেরও বেশি উচ্চতায় জুকু উপত্যকা তার প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের জন্য বিখ্যাত। শোনা যায়, এখানে যে ফুল ফোটে তা ভারতের অন্য কোথাও নাকি দেখা যায় না।
এই জুকু ভ্যালির ইতিহাসও বেশ আকর্ষণীয়। মনে করা হত, আদিম মানুষের আবাসস্থল ছিল জুকু। এখন যদিও জুকু ভ্যালি খুব জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। মরসুমি ফুল, গাছপালা আর উঁচু পাহাড়ের সৌন্দর্যে ঘেরা এই উপত্যকা। নাগাল্যান্ডের বিশ্বেমা গ্রামের পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে এখানে সহজেই যাওয়া যায়।
নাগাল্যান্ডের রাজধানী কোহিমা থেকে উপত্যকাটির দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। জুকু উপত্যকা ভারতের সেরা ট্রেকিং স্পট হিসেবে বিখ্যাত। ঘন সবুজে মোড়া এই জুকু উপত্যকা ভারতের ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার নামে পরিচিত। এটি নাগাল্যান্ডের অত্যন্ত প্রিয় একটি পর্যটন স্থান। প্রত্যেক বছর বসন্তকালে দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক এখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করে যান। কারণ ঐ সময় রংবেরঙের ফুলে ছেয়ে থাকে গোটা উপত্যকাটি। তাই বসন্ত ঋতুই হল এখানে আসার উপযুক্ত সময়।
জুকু ভ্যালি যাওয়ার দুটো পয়েন্ট আছে– ভিসামা আর জাখামা। কিসিমা গ্রাম থেকে ভিসামা যেতে মোটামুটি ৪৫ মিনিট সময় লাগে। ভিসামা থেকে জুকু ভ্যালি যাওয়ার পারমিট নিতে হয়। পারমিট নিয়ে আরও ৪০ মিনিট গেলে ভিসামা বেস পয়েন্ট। লম্বা, ঘন গাছের সারির মধ্যে দিয়ে হাঁটা পথ। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ, দূরে ছবির মতো পাহাড়ি গ্রাম দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে। এখানে যেতে হলে নাগাল্যান্ডের নিয়ম অনুযায়ী পর্যটকদের প্রি-বুকিং প্যাকেজ থাকতে হবে, না হলে নাগাল্যান্ডে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
যাতায়াতের দুই তরফের ই-টিকিট আগে থেকেই বুক করে রাখতে হবে। এবং পর্যটকদের কাছে অবশ্যই থাকতে হবে পরিচয় পত্র। নাগাল্যান্ডে ঢুকতে গেলে লাগে ইনার পারমিট লাগে। দেশি ও বিদেশি সব পর্যটকদের জন্যই ইনার পারমিট বাধ্যতামূলক। অনলাইনে এটির জন্য আবেদন করা যায়। চলতি বছর আর মাস কয়েকবাদে আসবে বসন্ত, তখন একঘেয়েমি অফিসের ক্লান্তি দূর করে মনকে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য সপ্তাহ খানেকের ছুটি নিয়ে একবার ঘুরে আসতেই পারেন নাগাল্যান্ডের বিখ্যাত ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার এই জুকু উপত্যকাটি।