রাজ্যের খবর

বয়সের প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে সত্তর পার করেও নিরলস পট চিত্র শিল্পী রেবাদেবী

Reba Devi is a tireless poster artist who has lost the barrier of age

The Truth of Bengal: একটা পুজো উপহার দিতে বহু মানুষের অবদান থাকে। শিল্পীরা নিজেদের শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলে অপরূপ করে তোলেন মণ্ডপ। সেই শিল্পীদের মধ্যে অন্যতম হল পটচিত্রের সঙ্গে মানুষজন। যাদের হাতের তৈরি নিখুঁত পটচিত্র সুসজ্জিত হয়ে ওঠে মণ্ডপ। এমন শিল্পকর্ম যারা উপহার দেন তাঁরা রয়ে যান লোকচক্ষুর অন্তরালে। সেই পটশিল্পীদের মধ্যে একজন হলেন নদিয়ার নদিয়ার কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির পটুয়া পাড়ার বাসিন্দা রেবা পাল। বয়সের ভারে আজ তিনি প্রায় ন্যুব্জ। তাও একাগ্রচিত্তে পটের কাজ করে চলেছেন। পুজো আসতে আর বেশিদিন বাকি নেই। জরাজীর্ণ বাড়ির এক চিলতে বারান্দায় বসে স্টোভে সাবুর আঠা জ্বাল দিয়ে পটচিত্র এঁকে চলেছেন রেবাদেবী।

পাল বাড়িতে বিয়ে হওয়ার পর থেকেই দেখছেন শশুর ও স্বামীর পটচিত্র আঁকা। ধীরে ধীরে রেবা দেবীও স্বামী-শ্বশুরের পথ ধরেন। দু’জনের মৃত্যুর পর তাঁদের শিল্পকর্মকে বাঁচিয়ে রেখেছেন তিনি। পটচিত্র থেকে সামান্য যা আয় হয়, সেই আয়ই জীবনধারণের একমাত্র পথ ও অবলম্বন। দেবাদেবীর তৈরি পটচিত্র কলকাতার কুমোরটুলি সহ রাজ্য ছাড়িয়ে ভিনরাজ্যে পাড়ি দেয়। সারা বছর কম বেশি কাজ থাকলেও দুর্গাপুজোর সময় পটচিত্রের চাহিদা থাকে বেশি। এই বৃদ্ধা বয়সে হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর পান না উপযুক্ত পারিশ্রমিক। তাও তিনি এই কাজ করে চলেছেন। আবেগ ও ভালবাস মিশিয়ে তিনি কাজ করে চলেছেন।

স্বামী ও শ্বশুরকে দেখে অজান্তে পটশিল্পকে ভালবেসে ফেলেছিলেন। তারপর একাত্ম হয়ে পড়েন বাংলার এই প্রাচীন লোকশিল্পের সঙ্গে। যত বয়স বেড়েছে, ততই পটশিল্পের সঙ্গে তাঁর প্রেম বেড়েছে। তবে আজ করে করে ভাললাগা থাকলেও তেমন আয় হয় না। তাও এই পেশা ছাড়ার কথা ভাবতে পারেন না বৃদ্ধা রেবা দেবী। কাঁপা কাঁপা হাতে একাই সব উপকরণ সাজিয়ে একে চলেছেন পটচিত্র। যা পৌঁছে যাবে কোনও পুজোমণ্ডপে। শিল্পকর্ম দেখে খুশি হবে মানুষ। কিন্তু, কেউ জানবে না শিল্পের সেই স্রষ্টা কেমন অসহায় দিন কাটাচ্ছেন।

Related Articles