
The Truth of Bengal,Mou basu: জাপানের টপ-আপ এই রেস্তোরাঁর নামই হচ্ছে “Restaurant of Mistaken Order”।গোটা বিশ্বের মতোই স্মৃতিভ্রংশ রোগ এক চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে জাপানেও। জাপানের জনসংখ্যার বেশিরভাগই প্রবীণ। দিন কে দিন সে’দেশে অ্যালঝাইমার্স রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এসব রোগীদের সমাজে ব্রাত্য না করে দিয়ে পুনর্বাসনের কথা ভাবেন “Restaurant of Mistaken Order” এর মালিক শিরো ওগুনি। রেস্তোরাঁর সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্যেই লেখা আছে, “এই রেস্তোরাঁয় আপনি যে খাবার অর্ডার দিয়েছেন তা আপনার কাছে নাও ঠিকমতো পৌঁছতে পারে। অর্থাৎ প্রথমেই স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে ভুল অর্ডারের খাবার যা ক্রেতা অর্ডার দেয়নি তা পরিবেশন করা হতে পারে। কারণ, রেস্তোরাঁর বেশিরভাগ কর্মচারীই ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত।
তাই তাঁরা ঠিকঠাক মনে রেখে খাবারের অর্ডার নাও নিতে পারেন। আশ্চর্যের বিষয় হল, ভুলোমনা রেস্তোরাঁর কর্মচারীদের দৌলতে ক্রেতারা ভুলভাল খাবার পেলেও এই রেস্তোরাঁ নিয়ে ক্রেতারা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। অভিনব রেস্তোরাঁ প্রসঙ্গে রেস্তোরাঁ মালিক শিরো ওগুনি জানান, “একা কোনো কাজ করা যায় না। সবাইকে নিয়ে চলারই নাম জীবন। কারণ কারোকে ব্রাত্য করে রাখলে সমাজে সেই ব্যক্তি ক্রমশ একঘরে হয়ে পড়ে। তাই এই পৃথিবী যাতে স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কাছে জীবনধারণের জন্য সহজ, আপন হয়ে ওঠে সে কথা ভেবেই আমার এই রেস্তোরাঁ খোলা। আমার রেস্তোরাঁয় যে সব কর্মচারী কাজ করেন তাঁরা কেউ মধ্যবয়সী কেউ আবার বয়স্ক। ভুলোমনা সব মানুষ সব কথা মনে রাখতে পারেন না। উল্টো পাল্টা খাবারের অর্ডার নেন কিন্তু প্রত্যেকেই হাসিমুখে ক্রেতাদের সামলাতে পারেন।
তাই আমাদের রেস্তোরাঁ থেকে ক্রেতারা হাসিমুখেই বেরোন। আমি চাই না ডিমেনশিয়া, অ্যালঝাইমার্সে আক্রান্ত রোগীদের কেউ সমাজে ব্রাত্য করে রাখুক। তাঁরাও আমাদের আপনজন। তাঁরাও সবকিছু পারেন।”২০১৭ সালে জাপানের মাচিদাতে প্রথম গড়ে ওঠে অভিনব এই রেস্তোরাঁ। ২০১৮ সালে ক্যাফে কাম রেস্তোরাঁর শাখা খোলে শিজৌকায়। ২০১৯ সালে টোকিওতে জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণমন্ত্রকেও এই রেস্তোরাঁর একটি শাখা খোলা হয়। তারপর থেকে সব জায়গাতেই হইহই করে চলছে অত্যন্ত ফ্যাশনেবল ও স্টাইলিশ এই রেস্তোরাঁ। এই ফুড জয়েন্টের খাবারের তালিকাও অত্যন্ত সুস্বাদু বলে তা অচিরেই খাদ্যরসিকদের মন জয় করেছে। রেস্তোরাঁ সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্যেই বলা আছে চালু হওয়ার পর এখনো পর্যন্ত এই রেস্তোরাঁয় ৩৭% খাবারের অর্ডার ভুল নেওয়া হয়েছে ও উল্টো খাবার পরিবেশন করা হয়েছে তাও গ্রাহক সন্তুষ্টি ৯৯%।