কলকাতা

হরিণঘাটায় অত্যাধুনিক বাণিজ্যিক ব্রয়লার ফার্ম

State-of-the-art commercial broiler farm in Haringhata

Truth Of Bengal: রাহুল চট্টোপাধ্যায়: রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের অধীন ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভ স্টক ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড-এর উদ্যোগে একটি অত্যাধুনিক বিজ্ঞানসম্মত বাণিজ্যিক ব্রয়লার মুরগি খামারের উদ্বোধন হল। নদিয়ার মোহনপুরের হরিণঘাটায় ৭ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান সম্মত, পরিবেশবান্ধব অত্যাধুনিক ন’টি শেড এ ৫৫ হাজার বাণিজ্যিক ব্রয়লার মুরগি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে একই সঙ্গে পালন করা যাবে।

এতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ২৪০ জনের কর্মসংস্থান হবে। ওই খামারের উৎপাদিত মাংস সারা রাজ্যেই উপভোক্তাদের চাহিদা মেটাবে। ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইফ স্টক ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড ‘হরিণঘাটা লাইভ’ ব্র্যান্ডে সুলভ মূল্যে মুরগি ও মাংস সরবরাহ ও বিপণন করবে। ওই অত্যাধুনিক খামারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, আয়োজক ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভ স্টক ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা. উৎপল কর্মকার, হরিণঘাটা ফার্মের অতিরিক্ত অধিকর্তা ডা. প্রবীর কুমার পাঠক, প্রাণিসম্পদ বিকাশ মন্ত্রীর ওএসডি শ্যামল সরকার, হরিণঘাটা পৌরসভার চেয়ারম্যান দেবাশিস বসু, ভাইস চেয়ারম্যান সঞ্জীব রাম, কাউন্সিলর সীমা কাঞ্জিলাল, নদিয়া জেলা পরিষদের পূর্ত কার্য ও পরিবহন স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ দেবাশিস গাঙ্গুলী, সমাজকর্মী উত্তম সাহা প্রমূখ।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে প্রানিসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ও অনুপ্রেরণায় রাজ্য সরকারের এই অত্যাধুনিক খামারের সূচনা হল। নয়টি শেড অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় পড়েছিল, যেগুলোকে আমরা পুনর্নির্মাণ করে এই খামার চালু করলাম। মাংস প্রক্রিয়াকরণের জন্য উন্নত মানের ব্রয়লার মুরগি সরবরাহ ধারাবাহিকভাবে সারা বছর ধরে নিশ্চিত করতে এই প্রকল্প। এই নয়টি শেডে ৬৫ হাজার পর্যন্ত মুরগি রাখা যেতে পারে। এর মোট এলাকা ৫১ হাজার ৬৬৪ বর্গফুট।

এই প্রসঙ্গে রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দফতরের দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বিবেক কুমার জানান, রাজ্য সরকারের লক্ষ্য ন্যায্য ও সুলভ মূল্যে রাজ্যের মানুষকে গুণগতমান সম্পন্ন মাংস ও ডিম সরবরাহ করা। পাশাপাশি অতিরিক্ত কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা। আয়োজক ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভ স্টক ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা.উৎপল কর্মকার এই প্রকল্প সম্বন্ধে জানালেন, একসঙ্গে তিনটি শেডে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চাদের রাখা হবে এবং ১০ দিন অন্তর ওগুলি সরিয়ে আবার নতুন মুরগির বাচ্চা রাখা হবে।

কম জায়গায় সর্বাধিক বাচ্চা রাখা যাবে এবং রোগের ঝুঁকি কম থাকায় অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই মুরগির বাচ্চাদের প্রতিপালন করা হবে। আরআইডিএফ এর মাধ্যমে সব শেডই এনভায়রনমেন্টালি কন্ট্রোলড (ইসি) শেড এ রূপান্তর ঘটানো হয়েছে। এই ধরনের শেড এ প্রতি কেজি পাখির উৎপাদনের খরচ কম হবে। ভালো বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকার কারণে ক্ষতিকারক অ্যামোনিয়া সহ অন্যান্য গ্যাসের প্রভাব কমবে যার ফলে মুরগির স্বাস্থ্যের বিভিন্ন ক্ষতিকারক প্রভাব কম হবে।

তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণের সুব্যবস্থা থাকার কারণে ব্রয়লার পাখির জন্য উপযোগী আরামদায়ক পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব হবে যার ফলে গরম ও শীতের সময় তাদের স্ট্রেস কম হবে। এই ফার্মের পুনর্নির্মাণের কাজ যিনি শুরু করেছিলেন, ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভ স্টক ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড-এর পূর্বতন ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা বাংলার ডেয়ারির বর্তমান ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা.গৌরীশংকর কোনার বলেন, রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পটি একটি মডেল প্রকল্প যা আগামী দিনে উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করবে এবং রাজ্যের পোল্ট্রি উৎপাদনে ও উন্নয়নে সার্বিকভাবে সহায়তা করবে। এই হরিণঘাটা বাণিজ্যিক ব্রয়লার ফার্ম পোল্ট্রি জগতে একটি মাইল ফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

Related Articles