স্বপ্নই যখন শাস্তির কারণ! শিকল বাঁধা তরুণীর কাহিনী মর্মাহত করবে আপনাকেও
When dreams are the reason for punishment! The story of a young woman in chains will shock you too

Truth Of Bengal: হাওড়ার ঘুষুড়ি এলাকা। এক বহুতলের পঞ্চম তলার ফ্ল্যাটে দিনের পর দিন বন্দি এক মেয়ে। তাঁর স্বপ্ন, পড়াশোনা শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়ানো, ভালো একটা চাকরি পাওয়া। কিন্তু সেই স্বপ্নই যেন হয়ে উঠল তাঁর শাস্তির কারণ।
২০ বছর বয়সী আরতি সাহু, সাবিত্রী গার্লস কলেজের ছাত্রী, পাশাপাশি একটি কল সেন্টারে কাজ করেন। পড়াশোনা, চাকরি—সব মিলিয়ে নিজেকে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরিবার চেয়েছিল বিয়ে। এখনই। আরতি রাজি না হওয়াতেই, পরিবার তাঁকে আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়—আক্ষরিক অর্থেই। পায়ে লোহার শিকল বেঁধে ঘরে তালাবন্দি করে দেওয়া হয় তাঁকে।
স্বপ্নই যখন শাস্তির কারণ! শিকল বাঁধা তরুণীর কাহিনী মর্মাহত করবে আপনাকেও pic.twitter.com/hcvNFUmNCf
— TOB DIGITAL (@DigitalTob) April 12, 2025
এই ঘটনার কথা জানাজানি হয় শুক্রবার সকালে। ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখে বাড়িওয়ালা ভিতরে তাকিয়ে শিউরে ওঠেন—ঘরের ভিতরে একটি মেয়ে শিকলে বাঁধা! সঙ্গে সঙ্গে খবর যায় স্থানীয় মহিলা তৃণমূল নেত্রী সন্ধ্যা রায়ের কাছে। তিনিই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে উদ্ধার করে আরতিকে নিয়ে যায় থানায়।
আরতির কথা, “আমি শুধু পড়তে চেয়েছিলাম। একটু ভালোভাবে বাঁচতে চেয়েছিলাম। সেটা যদি অপরাধ হয়, তবে আমি দোষী।” আরতির বাবা-মা অবশ্য এই কাজের পেছনে নিজেদের যুক্তিও দিয়েছেন। তাঁদের মতে, মেয়ে ‘খারাপ পরিবেশে’ কাজ করছিল, ভালো-মন্দ বোঝার মতো বয়স হয়নি, তাই তাঁরা বাধ্য হয়ে এমনটা করেছেন।
ঘটনাটি সামাজিকভাবে এক গভীর প্রশ্ন তোলে—একজন তরুণী নিজের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে চাইলে, তার পরিবার কি তাকে শাস্তি দিতে পারে? মেয়েদের স্বাধীনতা, শিক্ষা ও কর্মজীবন নিয়ে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। হাওড়া সিটি পুলিশ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। তবে এখনো পর্যন্ত আরতি কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। এই ঘটনা সমাজকে জিজ্ঞাসা করছে—মেয়েদের স্বপ্ন দেখতে দোষ কোথায়?