আহং স্বাহা, কলকাতায় আত্মহত্যার প্রতিরোধে সচেতনতার জোয়ার
Ahang Swaha, a wave of awareness to prevent suicide in Kolkata

Truth Of Bengal: শিল্প, সচেতনতা ও সমাজসেবার এক আবেগময় মিলনস্থল হয়ে উঠে ‘আহং স্বাহা’— কলকাতার রোটারি সদনে এই অনুষ্ঠানে শহরের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। ঝর্ণা ভট্টাচার্য্যের ভাবনায় এবং আই কমিউনিকেশনস-এর পরিকল্পনায় মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সামাজিক কুসংস্কার ভেঙে আত্মহত্যা প্রতিরোধে সহানুভূতিপূর্ণ আলোচনা শুরু করার কথা তুলে ধরে এই অভিনব উদ্যোগ।
অলকানন্দা রায়, রিচা শর্মা এবং মাধবীলতা মিত্রের মত বিশিষ্টদের উপস্থিতিতে এই উদ্যোগকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে, যা মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সম্মিলিত পদক্ষেপের গুরুত্বকে সামনে আনে। শিল্প ও সমাজকল্যাণে তাঁদের নিরলস অবদানের জন্য তাঁদের সংবর্ধিত করা হয়। সিনিয়র সিটিজেনদের ডিপ্রেশন, সিঙ্গল পেরেন্টিং-এর চ্যালেঞ্জ ও ট্রান্সজেন্ডারদের জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে তৈরি অডিও – ভিজ্যুয়াল ও পারফরম্যান্সগুলি দর্শকদের ভাবিয়ে তোলে। প্রতিটি সেগমেন্টকে ভাষণ ও শিল্পভাষ্যের মাধ্যমে সূক্ষ্মভাবে উপস্থাপন করা হয়। যা এক সহানুভূতিমূলক গল্প বলার অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করে।

সাংস্কৃতিক পর্বে উল্লেখযোগ্য ছিল মনশিজ-এর গান ও কবিতার সম্মিলন, অনুরেখা ঘোষ ডান্স কোম্পানির পরিবেশিত “চিত্রাঙ্গদার কাহিনী” এবং সোহিনী দাস এর নৃত্য ও কবিতার যুগলবন্দি। প্রতিটি পরিবেশনা আবারও প্রমাণ করে যে—শিল্প কতটা শক্তিশালীভাবে জটিল আবেগ ও অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারে।
এই অনুষ্ঠানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল ‘সুইসাইড প্রিভেনশন অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম’ (এসপিএপি )-এর পোস্টার উন্মোচন। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ভবিষ্যতে স্কুল ও কলেজগুলোতে সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা, যাতে তরুণদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য, আবেগগত সুস্থতা ও আত্মহত্যা প্রতিরোধ নিয়ে আগাম আলোচনা শুরু হয়। আহং স্বাহা সফল হয়েছে ‘সংবেদন সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’, ‘লাইফলাইন ফাউন্ডেশন’, ‘জীবিকা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’, ‘জাগৃতি ধাম’, ‘মনোশিজ’, ‘রীতা রায় মিউজিক অ্যাকাডেমি’ এবং ‘বাঁচবো হিলিং টাচ ফাউন্ডেশন’- এর মত একাধিক মানসিক স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়নমুখী সংস্থার সহযোগিতায়।

প্রধান উদ্যোক্তা ঝর্ণা ভট্টাচার্য বলেন, আহং স্বাহা শুধু আত্মহত্যা প্রতিরোধ সচেতনতার কর্মসূচি নয়—এটি এক আবেগময় আন্দোলন, যা মানুষের মনের লড়াইকে আলোয় নিয়ে আসে। আই কমিউনিকেশনস-এর পরামর্শদাতা সৌম্যজিৎ মহাপাত্র বলেন, সচেতনতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে, বিশেষ করে তরুণ সমাজের মধ্যে, আমরা এমন এক সমাজ গড়তে চাই – যা শোনে, সমর্থন করে ও সহানুভূতির সঙ্গেই কাজ করে। আহং স্বাহা দর্শকদের মনে এক স্থায়ী প্রভাব রেখে যায় —যেখানে সহানুভূতি, গল্প বলা এবং সম্মিলিত উদ্যোগকে সমাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার মোকাবিলায় অপরিহার্য বলে তুলে ধরা হয়।