ফাইনালে টসে জিতলে ভারত ব্যাট করুক: ইন্দুভূষণ রায়, প্রাক্তন ক্রিকেটার
India should bat if they win the toss in the final: Indubhushan Roy, former cricketer

Truth Of Bengal: রবিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ম্যাচ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হাইভোল্টেজ ম্যাচ। অন্য ম্যাচগুলোর তুলনায় অবশ্যই এই ম্যাচের গুরুত্ব অনেকটাই আলাদা। সেটা আর নতুন করে বোঝাবার দরকার নেই। কেননা রবিবারের ম্যাচ যে দল জয়লাভ করবে, ইতিহাসের পাতায় খেতাব জয়ী হিসাবে তাদের নামটাই রয়ে যাবে। কাজেই ফাইনাল ম্যাচ আমার অন্য ম্যাচগুলির থেকে সবসময়ই আলাদা।
উদাহরণ হিসাবে বলতে পারি অনেকটা ভারত বনাম পাকিস্তানের ম্যাচের মত রবিবারের ম্যাচেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করবে ফাইনালে মাঠে নামা দুই দেশের ক্রিকেটাররা। অর্থ্যাৎ এই ম্যাচ সব সময়ই ফিফটি। যে কেউ ফাইনালে জিততে পারে।
তবুও এতটুকু দ্বিধা না রেখে বলতে পারি, ভারতকে এই ম্যাচে আমার চোখে কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখব। তার কারণ হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের দলগত পারফরম্যান্স। কি বোলিং, কি ব্যাটিং ভারত যেন সব বিভাগেই অন্য দলগুলির থেকে কিছুটা হলেও এগিয়ে আছে। বোলিং শামি তো আছেই, স্পিনার হিসাবে জাড্ডু, বরুণ এবং কুলদীপ। এক কথায় অসাধারণ কম্বিনেশন। সবচেয়ে বড় কথা হল, শামির পাশাপাশি স্পিনাররাও সমানতালে পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন। এটা টিম কম্বিনেশনের দারুণ ফসল বলা যেতে পারে। বরুণকে নিয়ে আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, বরুণ যদি ছন্দে থাকেন, তাহলে ফাইনাল ম্যাচেও কিউয়ি ব্যাটারদের পক্ষে ওকে সামলানো মুশকিল হবে।
বোলিং-র পাশাপাশি ব্যাটিং লাইনআপের ছন্দও রয়েছে দারুণ। বিশেষ করে মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা নিজেদের দায়িত্বটা খুব সুন্দরভাবে পালন করছেন। রোহিত চটজলদি আউট হলেও শুরুটা দারুণভাবে করে দিয়ে যাচ্ছে। তবে রবিবার যদি রোহিত ক্রিজে টিকে যান, তাহলে কিন্তু কপালে দুঃখ আছে স্টান্টনারদের। আর এই সিরিজে বিরাটের কথা তো আলাদাভাবে বলতেই হবে। অনবদ্য খেলতে দেখা যাচ্ছে বিরাটকে। এখানেও বলে রাখি, এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত ফাইনালের আগে অবধি যে সাফল্য পেয়ে এসেছে তার আশি ভাগ কৃতিত্ব বিরাট কোহলির।
পাশাপাশি শুভমন দুটো ম্যাচে রান না পেলেও এই পঞ্জাব ব্যাটারকে নিয়েও আমি আশাবাদী। শুভমন ফাইনাল ম্যাচে রান পেতেই পারেন। এবং শুভমন যদি রান পান তাহলে তো কথাই নেই। এঁদের পাশাপাশি অবশ্যই প্রশংসা করতে হবে শ্রেয়স আইয়ার, হার্দিক পাণ্ডিয়া এবং কেএল রাহুলের। বিরাট ব্যাটিং লাইনআপে অ্যাঙ্কারের ভূমিকা পালন করছেন। আর শ্রেয়স খেলেছেন তাঁর স্বাভাবিক খেলাটাই। একইরকম ভাবে নিজেদের স্বভাবসিদ্ধ খেলাটাই খেলছেন হার্দিক ও রাহুল। সুতরাং ব্যাটিং-ও দারুণ কম্বিনেশন। আর একটা কথা, যেটা হল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে আমরা কিন্তু ম্যাচ থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়েছি হার্দিকের অনবদ্য ব্যাটিংয়ের জন্যই। সেই সময় হার্দিক যদি ওইভাবে ওভার বাউন্ডারিগুলি না হাঁকাতেন, তাহলে ভারতের জয় পাওয়াটা মুশকিল-ই হত। যাক হার্দিক সেই যাত্রা থেকে আমাদের উদ্ধার করে দিয়েছে।
আমার মতে, যদি রবিবারের ম্যাচে ভারত টসে জেতে তাহলে যেন অবশ্যই ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন রোহিত। কেননা দুবাইয়ের পিচের যা আচরণ দেখছি, তাতে প্রথমে ব্যাট করে ২৭৫ রান করতে পারলেই কিন্তু প্রতিপক্ষ চাপে পড়ে যাবে। পরে ব্যাটিং করলে বোলাররা অনেকটা সুবিধা পাবেন। সেক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে পারেন ব্যাটাররা।
অপরদিকে নিউজিল্যান্ড দলও কিন্তু যথেষ্ট ব্যালন্সড দল। কেননা গ্রুপ লিগে আমাদের কাছে হারলেও এই ম্যাচে ওরা ট্রফি জয়ের জন্য মরণ-কামড় দেবে। নিউজিল্যান্ডকে যেন কোনওভাবেই হাল্কাভাবে না নেন টিম-ইন্ডিয়া। ওদের দলেও ম্যাচ জেতানোর খেলোয়াড় রয়েছেন। এর আগে ওরাও কিন্তু আমাদের হারিয়েছে। সেইদিক থেকে যেন সজাগ থাকেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। তবুও আমি বলছি, রবিবার ম্যাচে জোড় লড়াই হলেও, সবদিক বিচার করে আমার মনে হচ্ছে ভারত-ই ফেভারিট।