কাউকে ধর্মোপদেশ দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই পাকিস্তান, রাষ্ট্রসংঘে তীব্র ভর্ৎসনা ভারতের
Pakistan is not in a position to preach to anyone, India strongly reprimands it at the UN

Truth Of Bengal: বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) ৫৮তম অধিবেশনের সপ্তম বৈঠকে ভারত পাকিস্তানকে কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করেছে। ভারত পাকিস্তানকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করেছে। শুধু তাই নয়, ভারত আরও বলেছে যে, আজকের সময়ে টিকে থাকার জন্য পাকিস্তানের অনুদানের প্রয়োজন। দেশটি সম্পূর্ণরূপে আন্তর্জাতিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীল। পাকিস্তান কাউকে জ্ঞান প্রদান করার মতো অবস্থানে নেই।
জেনেভায় রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী মিশন ক্ষিতিজ ত্যাগী অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তান সরকার সেনাবাহিনীর নির্দেশে কাজ করছে এবং তাদের হয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। জম্মু ও কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছিলেন পাকিস্তানি আইনমন্ত্রী আজম নাজির। তাঁর এই অভিযোগের জবাবে ত্যাগীর এই মন্তব্য এসেছে।
ত্যাগী বলেন, ‘এটা দুঃখজনক যে, পাকিস্তানের নেতারা এবং প্রতিনিধিরা তাদের সামরিক সন্ত্রাসী কমপ্লেক্সের দ্বারা ছড়িয়ে পড়া মিথ্যা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।’ ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-কে তাদের মুখপত্র বলে আখ্যা দিয়ে পাকিস্তান তাদের উপহাস করছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে কাউন্সিলের সময় নষ্ট হচ্ছে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের দ্বারা, যারা অস্থিরতার উপর ভর করে এবং আন্তর্জাতিক অনুদানের উপর টিকে থাকে। এর বাগ্মিতা ভণ্ডামি, অমানবিকতা এবং অযোগ্যতায় পরিপূর্ণ। বিপরীতে, ভারত গণতন্ত্র, অগ্রগতি এবং তার জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা নিশ্চিত করার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে কাজ করছে। যেসব মূল্যবোধ থেকে পাকিস্তানের শিক্ষা নেওয়া উচিত।’
ভারত অভিযোগ করেছে, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক ফোরামের অপব্যবহার করে ভারত-বিরোধী বক্তব্য প্রচার করছে। ভারত স্পষ্টভাবে বলেছে, পাকিস্তান তার অভ্যন্তরীণ সংকট মোকাবেলায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তা সত্ত্বেও, পাকিস্তান তার অযৌক্তিক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন মনোভাব ত্যাগ করছেন না।
ত্যাগী আরও বলেন, জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের মতো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং থাকবে। তিনি সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এই ক্ষেত্রগুলিতে অর্জিত উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার কথাও উল্লেখ করেন। গত কয়েক বছরে জম্মু ও কাশ্মীরে অভূতপূর্ব রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতিই অনেক কিছু বলে দিচ্ছে।
এই সাফল্যগুলি কয়েক দশক ধরে পাকিস্তান-স্পন্সরিত সন্ত্রাসবাদের শিকার এই অঞ্চলে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের প্রতিশ্রুতির প্রতি জনগণের আস্থার প্রমাণ। যে দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন, সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিকল্পিত অবক্ষয় রাষ্ট্রীয় নীতির অংশ এবং যেখানে নির্লজ্জভাবে রাষ্ট্রসংঘ ঘোষিত সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়া হয়, সেখানে পাকিস্তান কাউকে বক্তৃতা দেওয়ার অবস্থানে নেই।
ত্যাগী পাশাপাশি বলেন, ‘মানবাধিকার বা গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলার কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা পাকিস্তানের নেই। সংখ্যালঘুদের উৎপীড়ন, রাজনৈতিক অসহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক স্তরে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত সন্ত্রাসীদের উস্কানি দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে। পাকিস্তানের মানবাধিকার বা লোকতন্ত্রের উপর কোনও বিশ্বাস নেই। ভারতের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া পরিত্যাগ করে পাকিস্তানকে প্রকৃত শাসন ও ন্যায়বিচারের উপর মনোযোগ দিতে হবে।’
১৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত পার্বথানেনী হরিশের এক জোরালো বিবৃতির পর ভারতের এই মন্তব্য এসেছে। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে (ইউএনএসসি) এক উন্মুক্ত বিতর্কের সময়, এম হরিশ বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের মন্তব্যে জম্মু ও কাশ্মীরের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কথা উল্লেখ করেছেন, যা ভারতের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমি আবারও স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে এবং থাকবে।’