দেশ

এআই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেনা সরকারি কর্মচারীরা, নির্দেশিকা জারি কেন্দ্রের

Government employees will not be able to use AI apps, Center issues guidelines

Truth of Bengal: দেশের নিরাপত্তায় এআই নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। ভারতের অর্থমন্ত্রক চ্যাটজিপিটি এবং ডিপসিকের মতো এআই টুল এবং অ্যাপ্লিকেশনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে। ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে জারি করা এই সার্কুলারটির লক্ষ্য হল সংবেদনশীল সরকারি তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সম্ভাব্য সাইবার হুমকি প্রতিরোধ করা।

অর্থমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব প্রদীপ কুমার সিং স্বাক্ষরিত এই আদেশে বলা হয়েছে, সরকারি কম্পিউটারে এআই-সক্ষম অ্যাপ্লিকেশনের ব্যবহার গোপনীয় সরকারি তথ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। এই পরিপ্রেক্ষিতে, মন্ত্রণালয় সকল কর্মচারীকে অফিসিয়াল ডিভাইসে এই ধরনের সরঞ্জাম ব্যবহার এড়াতে পরামর্শ দিয়েছে। অর্থ সচিবের অনুমোদনের পর এই আদেশ জারি করা হয়েছে এবং রাজস্ব, অর্থনৈতিক বিষয়, ব্যয়, পাবলিক এন্টারপ্রাইজ, ডিআইপিএএম এবং আর্থিক পরিষেবা-সহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বিভাগগুলিতে পাঠানো হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী এআই অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের অংশ হিসেবে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। চ্যাটজিপিটি-সহ অনেক এআই মডেল ব্যবহারকারীর ইনপুট বহিরাগত সার্ভারে কাজ করে, যার ফলে ডেটা ফাঁস বা অননুমোদিত অ্যাক্সেসের সম্ভাবনা থাকে। এর আগে, অনেক বেসরকারি কোম্পানি এবং বিশ্বব্যাপী সংস্থাও সংবেদনশীল তথ্যের অপব্যবহার এড়াতে এআই সরঞ্জামের ব্যবহার সীমিত করেছে। এর আগে, ইতালি এবং অস্ট্রেলিয়াও চিনের এআই টুল ডিপসিক নিষিদ্ধ করেছে।

সরকার কেন এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল?

১. ডেটা ফাঁসের ঝুঁকি- চ্যাটজিপিটি এবং ডিপসিকের মতো এআই মডেলগুলি ব্যবহারকারীর প্রবেশ করা ডেটা বহিরাগত সার্ভারে প্রক্রিয়া করে। এর অর্থ হল, যদি সরকারি কর্মচারীরা এই সরঞ্জামগুলিতে গোপনীয় তথ্য প্রবেশ করান, তাহলে সেই তথ্য সংরক্ষণ, অ্যাক্সেস বা অপব্যবহার করা হতে পারে। সরকারি বিভাগগুলির কাছে আর্থিক তথ্য, নীতি খসড়া এবং অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের মতো সংবেদনশীল তথ্য থাকে। যদি এই তথ্য ফাঁস হয়ে যায়, তাহলে এটি জাতীয় নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক নীতির জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হতে পারে।

২. এআই মডেলের উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণের অভাব- সরকারি অফিসে ব্যবহৃত ঐতিহ্যবাহী সফটওয়্যারের বিপরীতে, এআই টুলগুলি ক্লাউড-ভিত্তিক এবং বেসরকারি কোম্পানিগুলির মালিকানাধীন। উদাহরণস্বরূপ, চ্যাটজিপিটি-এর মালিকানাধীন ওপেনএআই এবং এই সরঞ্জামগুলি কীভাবে তথ্য সংরক্ষণ বা প্রক্রিয়াজাত করে তা নিয়ন্ত্রণ করার কোনও উপায় সরকারের নেই। এটি বিদেশি হস্তক্ষেপ এবং সাইবার আক্রমণের জন্য সম্ভাব্য হুমকি তৈরি করতে পারে।

৩. তথ্য সুরক্ষা নীতিমালা মেনে চলা- ভারত ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা (ডিপিডিপি) আইন, ২০২৩-এর মতো কঠোর তথ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে কাজ করছে। যদি সরকারি কর্মচারীদের স্পষ্ট নিয়ম ছাড়াই এআই টুল ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে এটি ডেটা সুরক্ষা নীতি লঙ্ঘন করতে পারে এবং সরকারি ব্যবস্থাকে সাইবার আক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

Related Articles