কৃষকদের ডাকা বন্ধে স্তব্ধ পঞ্জাব, বাতিল শতাধিক ট্রেন
Punjab comes to a standstill due to farmers' strike, hundreds of trains cancelled

Truth Of Bengal: বহুদিন ধরে আন্দোলন চললেও কৃষকদের দাবি এখনও মানেনি কেন্দ্র সরকার। এমনকি, আলোচনাতেও বসতে রাজি নয় কেন্দ্র। তাই নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে সোমবার পঞ্জাবে বন্ধ ডেকেছিলেন কৃষকেরা। সেই বন্ধের প্রভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল পঞ্চ নদীর রাজ্যে। কৃষকদের বিক্ষোভের কারণে ২২১টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। অবরুদ্ধ রাস্তাঘাটও। সড়ক পথও বন্ধ। বন্ধ দোকানপাট। কৃষক ইউনিয়নের ডাকা পঞ্জাব বন্ধের কারণে মানুষের সমস্যা বেড়েছে। বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। কৃষক সংগঠনগুলি এই বন্ধ নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে সমর্থনের আবেদন জানিয়েছে।
সংযুক্ত কিসান মোর্চা (অরাজনৈতিক) এবং কিসান মজদুর মোর্চার ডাকে আবার পথে নেমেছেন কৃষকেরা। ওই দুই সংগঠন আগেই জানিয়েছিল, সোমবার সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত তারা বন্ধ পালন করবে। চিকিৎসা-সহ জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। সোমবার সকাল থেকেই পঞ্জাবের বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হতে শুরু করেন কৃষকেরা। জলন্ধর-দিল্লি জাতীয় সড়ক, অমৃতসর-দিল্লি হাইওয়ের উপর বসে পড়েন তাঁরা। ফলে ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ। মোহালিতে বিমানবন্দর যাওয়ার পথও অবরোধ করেছেন কৃষকেরা।
পঞ্জাব বন্ধের জেরে পাঠানকোট-অমৃতসর জাতীয় সড়কের লাডপালওয়া টোল প্লাজায় ধর্মঘটে বসে থাকা কৃষকরা যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। একইভাবে, পাঠানকোট এবং জম্মু ও কাশ্মীরের পথে সীমান্ত এলাকায় কাথলোর ব্রিজও বন্ধ করে দিয়েছেন কৃষকরা। একই সময়ে, পাঠানকোট বাসস্ট্যান্ডেও বন্ধের প্রভাব দেখা গিয়েছে, যার কারণে মানুষ অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
কৃষকদের পঞ্জাব বন্ধের প্রভাব পড়েছে রাজ্যের আর্থিক রাজধানী লুধিয়ানায়ও। মহাসড়কগুলিতে তীব্র যানজট। রেল পরিষেবাও স্থগিত করা হয়েছে এবং কৃষকরাও লাদোয়াল টোল প্লাজা এবং সাহনেওয়ালে বিক্ষোভ করেছে। এ কারণে যাত্রীরা সমস্যায় পড়েছেন। এ ছাড়া নগরীর প্রধান বাজারগুলিও বন্ধ রয়েছে। বন্ধের কারণে যান চলাচলেও প্রভাব পড়েছে। অনেক সংগঠনও এই বন্ধে কৃষকদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে, অমৃতসরের গোল্ডেন গেটে বিক্ষোভ করেছে কৃষক দল। একই সঙ্গে অমৃতসর জেলার বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করেছে কৃষকরা। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন কৃষকরা। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে লুধিয়ানার হাইওয়ের সুগার মিল চকে কৃষকদের বিক্ষোভ শুরু হয়। এখানে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
পাশাপাশি কৃষকদের কর্মসূচির কারণে যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সে দিকে নজর রেখেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে মোহালিতে ৬০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তারা রাজ্যের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। কৃষক নেতা সরওয়ান সিংহ পন্ধের বলেন, বন্ধের সময় শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবায় ছাড় থাকবে। কেউ যদি বিমানবন্দর যান, কিংবা চাকরির ইন্টারভিউ দিতে বা বিশেষ প্রয়োজন থাকে, তাঁদের আটকানো হবে না।
ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি), কৃষি ঋণ মকুব, পেনশনের ব্যবস্থা এবং বিদ্যুতের বিল না-বাড়ানোর মতো বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কৃষকদের আন্দোলন চলছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লি সংলগ্ন পঞ্জাব এবং হরিয়ানার শম্ভু এবং খানাউড়ি সীমানায় অবস্থানে বসে রয়েছেন কৃষকেরা। ২৬ নভেম্বর কৃষক নেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়াল আমরণ অনশন শুরু করার পর আন্দোলন নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। এর আগে রেল রোকো কর্মসূচিও নিয়েছিলেন কৃষকেরা। পন্ধের জানিয়েছেন, ডাল্লেওয়ালের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক। কিন্তু কেন্দ্র সহযোগিতা করছে না। তাই কেন্দ্রের উপর চাপ সৃষ্টি করতেই বন্ধের কর্মসূচি নিয়েছেন তাঁরা।