দেশ

গণতন্ত্রের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়, চালু হল দেশের প্রথম সংবিধান জাদুঘর

A new chapter in the history of democracy, the country's first constitution museum opens

Truth Of Bengal: ভারতের প্রথম সংবিধান জাদুঘর সম্প্রতি হরিয়ানার সোনিপতে অবস্থিত ও.পি. জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিতে (জেজিইউ) উদ্বোধন করা হয়েছে। লোকসভা স্পিকার ওম বিড়লা এবং আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল যৌথভাবে এই ঐতিহাসিক জাদুঘরের উদ্বোধন করেন। জাদুঘরটি সংবিধানের ইতিহাস, রচনা ও আদর্শ তুলে ধরতে এবং জনসাধারণকে শিক্ষিত ও অনুপ্রাণিত করতে একটি স্মারক হিসাবে কাজ করবে।

জাদুঘরটি ভারতের স্বাধীনতার পূর্বের সময় থেকে সংবিধানের রচনার যাত্রা পর্যন্ত তুলে ধরে ৩৬০-ডিগ্রি ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। জেজিইউ এবং আইআইটি মাদ্রাজের সহযোগিতায় নির্মিত স্যামভিড (S.A.M.V.I.D.) নামে একটি রোবট-গাইড দর্শকদের উন্নত মাল্টিমিডিয়া কাহিনির মাধ্যমে পুরো অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলে।

জাদুঘরের কেন্দ্রে রয়েছে ভারতীয় সংবিধানের মূল ফটোলিথোগ্রাফিক সংস্করণের একটি কপি, যেখানে সংবিধান প্রণেতাদের স্বাক্ষর রয়েছে। এছাড়াও, মহিলাদের ভূমিকা উদযাপনের জন্য নারী সদস্যদের অবদানকে তুলে ধরা হয়েছে অ্যানিমেশন ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে।

৩০০ জন সংবিধান সভার সদস্যের মূর্তির পাশাপাশি ড. বি.আর. আম্বেদকরের হোলোগ্রাফিক উপস্থাপনা দর্শকদের তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ও বক্তব্য সরাসরি অনুভব করার সুযোগ দেয়। এছাড়া জাদুঘরে বৈশ্বিক সংবিধানের প্রভাব এবং নন্দলাল বসুর মতো খ্যাতনামা শিল্পীদের সৃষ্ট শিল্পকর্মও প্রদর্শিত হয়েছে।

উদ্বোধনী বক্তব্যে লোকসভা স্পিকার ওম বিড়লা জাদুঘরের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “এই সংবিধান জাদুঘর একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমাদের সংবিধানের ইতিহাস এবং তার রচনার পেছনে থাকা প্রচেষ্টার সঙ্গে পরিচিত করবে।”

অর্জুন রাম মেঘওয়াল বলেন, “সমতা, স্বাধীনতা এবং ভ্রাতৃত্ব আমাদের সংবিধানের মূল স্তম্ভ। ড. বি.আর. আম্বেদকর বলেছেন, আমরা তখনই সত্যিকার স্বাধীন হব, যখন সমতা থাকবে।” তিনি চ্যান্সেলর নবীন জিন্দালের জাতীয় পতাকা প্রদর্শনের প্রচেষ্টাকেও প্রশংসা করেন।

জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা চ্যান্সেলর ও সংসদ সদস্য নবীন জিন্দাল জাদুঘরটিকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতীক এবং সংবিধান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসাবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “সংবিধান জাদুঘর আমাদের প্রতিষ্ঠাতাদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতীক। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম লিখিত সংবিধান, যা জনগণের অধিকার ও রাষ্ট্রের ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনতে গড়ে উঠেছিল।”

২৬ নভেম্বর সংবিধান দিবস উপলক্ষে এই জাদুঘর উদ্বোধন ভারতের গণতন্ত্র ও সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সংবিধান জাদুঘর শুধুমাত্র ইতিহাস সংরক্ষণ নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ভারতের সংবিধান ও তার মূল আদর্শের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে থাকবে।