রাজ্যের খবর
Trending

বাবাকে বাঁচাতে নদী পেরিয়ে থানায় নাবালক, তবুও হলনা শেষরক্ষা! কংগ্রেস কর্মী খুনের হুবহু বর্ণনা দিল ছেলে

To save the father across the river to the police station minor, but not the last defense! The son gave a detailed description of the Congress worker's murder

The Truth Of Bengal: এক মর্মান্তিক ঘটনায় সাক্ষী রইল ময়নাগুড়ির প্রত্যন্ত গ্রাম কলোনী এলাকা। সেখান থেকে অনেকটা দূরে থানা। গ্রামের জঙ্গলের ধরে প্রান্তের টানতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সন্তানের বাবাকে। এমনটাই দাবি করল আক্রান্তের সন্তান ‌। সেই সন্তান আরও জানান,বাড়ির বেড়া ভেঙে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। তার বাবাকে ঘর থেকে বার করে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছিল গ্রামের কয়েকজন। অপরদিকে অঝোরে কাঁদছিলেন তার মা। সেইখানে বাধা দেওয়ার মতন কেউ ছিল না । স্কুলে পড়া  বাচ্চাটার বয়স খুব বেশি হলে দশ হবে। বাবাকে চোখের সামনে ওইভাবে নিয়ে যেতে দেখে দুষ্কৃতীদের পিছু নিয়েছিল একাই।

সেই দশ বছরের ছেলেটি দেখেছে তার বাবাকে গাছে বেঁধে বেধড়ক পেটাচ্ছে এমনকি কি যেন একটা অস্ত্র দিয়ে কোপানো হচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে দৌড়াতে শুরু করেছিল ওই দশ বছরের শিশুটি। থানায় যেতে রাস্তায় নদী পেরিয়ে তারপর সেই ছোট্ট শিশুটি দৌড়ে ‌। দৌড়াতে দৌড়াতে গ্রামের লোকদের জিজ্ঞাসা করে কোনমতে পৌঁছে থানায়। তারপর পুলিশ কাকুদের কাছে গিয়ে অস্থির অবস্থায় সমস্ত ঘটনাটি বলে। তবে ততক্ষণে গাছে বাধা অবস্থাতে খেলে পরেছে তার বাবা। আক্রান্তের গা তখন রক্তাক্ত অবস্থায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে রয়েছে। যদি ওই শিশুটি নদী পেরিয়ে ত্রিশ মিনিট দৌড়ে থানায় গিয়েও প্রাণে বাঁচাতে পারল না তার বাবা ওরফে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির নিহত কংগ্ৰেজের কর্মী মানিক রায়ের ছেলে। সূত্রের খবর, বুধবার গভীর রাতে ময়নাগুড়িতে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কংগ্রেস কর্মী মানিক রায়কে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। ২০১৯ সালের একটি পুরনো বিবাদের জেরে এই ঘটনা টি ঘটেছে। যদিও পাঁচ বছর ধরে সপরিবারেই ঘর ছাড়া ছিলেন মানিক রায়। রবিবার দলের সাহায্যে আবারো বাড়ি ফেরেন তারা। বাড়ি ফেরার পর থেকেই তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ জানায় পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের সদস্যরা আরও দাবি করে, যারা অভিযুক্ত তারা সকলেই তৃণমূলের কর্মী। বুধবার রাতে বাড়ি থেকে মানিককে তুলে নিয়ে গিয়ে গাছে বেঁধে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে পরিবারের সদস্যরা। আর এই ঘটনা একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ছিল মানিকের নাবালক ছেলে, তার ছেলে জানান, “আমরা তখন ঘরে ছিলাম। ওরা প্রথমে বাইরে থেকে ঢিল মারতে শুরু করে। ওরা বলছিল, বেরা বেরা। আমরা বেরোয়নি। ওরা বেড়া ভেঙে ঘরে ঢুকে বাবাকে টেনে বাইরে নিয়ে যায়। বাবাকে গাছে বেঁধে ওরা ভীষণ মারছিল। আমি দূর থেকে দেখেই দৌড়ে থানায় যাই। তারপর পুলিশ আমাকে গাড়িতে নিয়ে আসে। তিরিশ মিনিট দৌড়েছিলাম।”

নিহতের স্ত্রী জানান , “তৃণমূলের লোকেরা ওর নামে নারী নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ করেছিল। পাঁচ বছর আমরা বাড়ি থেকে শিলিগুড়িতে ছিলাম। রবিবার বাড়িতে ফিরে আসি। এরপর বাপ্পা রায়, অমল দাস ওরা আবার এল আমাদের বাড়িতে। ওরা এসে বলে তোকে আজ ডিজেল দিয়ে পোড়াব, গাছে বেঁধে মারে। অস্ত্র দিয়ে মাথায় কোপাল।” এই ঘটনা জানাজানি হতে রাজ্য তথা রাজনীতিমহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এই ঘটনা পরিপেক্ষিতে এখনো পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও ১১ জনের বিরুদ্ধে এফ আই আর করা হয়েছে। পাশাপাশি বাকিদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।

Related Articles