রাজ্যের খবর

প্রতিক্ষার অবসান, বাড়ি ফিরছেন বিএস এফ জওয়ান পূর্ণম

The wait is over, BSF jawan Poornam is returning home

Truth Of Bengal: এক মাসের দীর্ঘ উদ্বেগ, আতঙ্ক আর প্রতীক্ষার পর অবশেষে নিজের মাটিতে, নিজের ঘরে ফিরছেন হুগলির রিষড়ার বাসিন্দা বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ। আজ, ২৩ মে বিকেল ৫টা নাগাদ, তাঁর ফিরে আসার খবরে পরিবার থেকে পাড়া—সর্বত্র বইছে আনন্দ আর স্বস্তির জোয়ার। রিষড়ার বাতাসে যেন এক নতুন প্রাণের ছোঁয়া।

গত ২৩ এপ্রিল, জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলার ঠিক পরদিন, ডিউটিরত অবস্থায় ভুলবশত সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েন পূর্ণম। পাক রেঞ্জার্স তাঁকে আটক করে। সেই থেকেই শুরু হয় এক অনিশ্চয়তা আর আশঙ্কার অধ্যায়। পাক সেনার হেফাজতে তাঁর অবস্থান নিয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটাতে থাকে পরিবার। তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী ছুটে যান বিএসএফ সদর দপ্তরে, যোগাযোগ রাখেন উচ্চপদস্থ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।

৭ মে ভারত পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিতে চালায় কড়া ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ। তাতেই কূটনৈতিক চাপে নতিস্বীকার করে ইসলামাবাদ। ১৪ মে, ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত দিয়ে পূর্ণমকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। শুরু হয় স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ।

সব পরীক্ষা শেষ হতেই শুক্রবার তিনি ফিরছেন নিজের চেনা ঠিকানায়, রিষড়ার সেই ছোট্ট বাড়িতে। চারপাশে সাজো সাজো রব। পতাকা, ফেস্টুন, আলোকসজ্জায় রঙিন হয়েছে পাড়া। অধীর অপেক্ষায় রয়েছে তাঁর ছোট ছেলে, যে বাবার কোলে মুখ গুঁজে খেলতে চায়। স্ত্রী রজনী জানান, “সব প্রার্থনা আজ সার্থক হতে চলেছে। এখন আর কিছু চাই না, শুধু ওর মুখটা দেখতে চাই কাছ থেকে।”

পূর্ণমের ঘরে ফেরা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত বা পারিবারিক স্বস্তির মুহূর্ত নয়, বরং একটি জাতির ঐক্যবদ্ধ কূটনৈতিক অবস্থান ও প্রতিরক্ষা নীতির বড় সাফল্য। সীমান্তে যে জওয়ান জীবন বাজি রেখে কাজ করেন, তাঁর নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষা করা যে দেশের অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে — এই ঘটনায় তারই জ্বলন্ত প্রমাণ মিলল।

পূর্ণমের জীবনে আজ যেন নতুন অধ্যায়ের সূচনা। যোদ্ধা হিসেবে ফিরে আসছেন তিনি, আবারও মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছেন তাঁর পরিবারের সামনে। রিষড়া আজ গর্বিত, আজ মুক্তির উৎসবে মাতোয়ারা।

Related Articles