রাজ্যের খবর

স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে মেলেনি চিকিৎসা, প্রতিবাদে জুটল মারধর, চাঞ্চল্য এলাকায়

The health card did not match the treatment, the protest was beaten up, there was a lot of excitement in the area

Truth Of Bengal: রাজ্য সরকার এর প্রকল্প স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে মেলেনি চিকিৎসা, মারধর ও টেনে হেঁচড়ে রোগীকে বের করে দিয়ে গেট বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ কোচবিহারের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। কোচবিহার শহরের মিনি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায়। ওই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।

অভিযোগ, গত ১০ই সেপ্টেম্বর পেটে ব্যাথা নিয়ে ভর্তি হয়। চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে রোগীর পরিবারের লোকজন জানতে পারে তার গলব্লাডারের পাথর রয়েছে। পরে সেই বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর অপারেশন হবে। তারজন্য ৩৩ হাজার টাকা ঠিক করা হয় এবং সেখানে তারা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়েও আলোচনা করে, সেই কার্ডে চিকিৎসা হবে বলে জানান বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পরের দিন সকালে রোগীর পরিবারের সাথে কথা না বলে অপারেশন করে ফেলেন চিকিৎসকরা।

পরে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে আসা হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর পরিবারকে ঘোরানো শুরু করে। তারপর ৩৩ হাজার টাকার বদল ৩৬ হাজার টাকা হাসপাতালের ক্যাস কাউন্টারে জমা দিতে বলেন। পরে রোগীর পরিবার গিয়ে ক্যাস কাউন্টারে কথা বললে ৩৬ হাজার টাকার বদলে ৩৩ হাজার টাকা জমা দিতে বলে। রোগীর পরিবার সেই টাকা জমা দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে টাকা কেটে নিতে বলেন। তারপর শুরু হয় ঝামেলা।

স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে কোন চিকিৎসা হবে না। ক্যাশ টাকা জমা দিতে বলেন। সেই নিয়ে কথা বলতে গিয়ে হাসপাতালের রিসিপশনের এক কর্মী, নার্স, আয়া, অন্যান্য কর্মচারীরা রোগীর স্বামীকে মারধর করে জামা ছিঁড়ে দেয় এবং মোবাইল হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। তারপর অপারেশনের রোগীকে বেড থেকে বের করে এনে হাসপাতালের গেটের বাহিরে বের করে দেয় এবং রোগীর হাতে থাকা মোবাইল নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। ওই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় কোচবিহার জেলা তৃনমূলের জেলা সভাপতি তথা ১৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অভিজিৎ দে ভৌমিক।

সেখানে কেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা হবে না তা জানতে। হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাথে কথা বলতে গেলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে রোগীর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে ৩৩ হাজার টাকা বুঝিয়ে দিয়ে রোগীকে বের করে নিয়ে আসা হয়। ওই উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে কোচবিহার কোতোয়ালি থানার পুলিশ। পরে রোগীর বাড়ির লোকজন ওই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করবে বলে জানান রোগীর স্বামী সৌরেন্দ্র গুহ মিত্র।

এদিন এ বিষয়ে কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা ১৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অভিজিৎ দে ভৌমিক জানান, আমার ওয়ার্ডের একজন বাসিন্দা কোচবিহারের ওই বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশনের জন্য ভর্তি করা হয়েছে। অপারেশন হওয়ার পর স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের টাকা নিতে চাইছে না। এমনকি রোগীর পরিবার টাকা দিতে না পারায় কয়েকজন নার্স, আয়া মিলে রোগী ও রোগীর পরিবারকে মারধোর করে হাসপাতালের বাহিরে বের করে দেয়। সেই অভিযোগ আমাদের কাছে এলে আমরা সেই বেসরকারি হাসপাতালে আসি। এবং চিকিৎসক বিকাশ মিশ্রের সাথে কথা বলি এবং রোগীকে ছুটি করিয়ে নেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা এই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক বিকাশ মিশ্রের কাছে রিকোয়েস্ট করি তারা যেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা হয়। কোন রোগীর পরিবারকে যেন ফিরিয়ে দেওয়া না হয়। এদিন এবিষয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক বিকাশ মিশ্র জানান, গত ১০ তারিখ ওই রোগী আমাদের হাসপাতালে আসেন। পরে তাকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। পরের দিন তিনি কোন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে আসে নি বা স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের কথা বলেনি।
তারপর ওই রোগীর অপারেশন হয়। পরে তার কাছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টাকা চায়। পরে রোগীর পরিবার বলেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আমরা টাকা দেব। ততক্ষনে আমরা রোগীর অপারেশন করে ফেলেছি। আপনারা জানেন যে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে নানা প্রটোকল রয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনে আবেদন করতে হবে তারপর অনুমতি আসবে তারপর আমরা সেটা করতে পারবো। সেই কারনে অপারেশন হওয়ার পর স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের কথা জানালে তা কোনভাবে সম্ভব নয়।
হাসপাতালের ভিতরে রোগী ও তার পরিবারকে মারধোর করার অভিযোগ অস্বীকার করে চিকিৎসক বিকাশ মিশ্র জানান, আমরা কোন প্রেসেন্ট পার্টিকে আমাদের হাসপাতালের কেউ মারধর করে নি। তাদের রুম থেকে বের করে একটি চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়েছে। বরং রোগীর পরিবারের লোকজন আমাদের কর্মচারীদের উপর চড়াও হয়। আমরা তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করবো বলে জানান তিনি।

Related Articles