বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা প্রয়োজন, লোকালয়ে বণ্যপ্রাণীদের প্রবণতা রুখতে লাগাতার প্রচার বন দফতরের
The forest department is continuously campaigning to prevent the trend of wild animals in the locality

The Truth of Bengal: অরণ্যের ঘেরাটোপ ছেড়ে প্রায়শই লোকালয়ে চলে আসছে বণ্যপ্রাণীরা। কখনও কখনও উন্মত্ত বাঘ-সিংহের মতো প্রাণীরা হিংসাশ্রয়ী আক্রমণ শানায়। যারজন্য মৃত্যু হয় সাধারণ মানুষের। বন দফতর এই প্রবণতা রুখতে লাগাতার প্রচার চালাচ্ছে। বন্যপ্রাণীদের বেপরোয়া হামলার নিরসনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা জরুরি। দেখে নেব কিভাবে বন্যরা জঙ্গল ছেড়ে জনজীবনে চলে আসছে।
কথায় বলে,বন্যরা বনে সুন্দর,শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। এখন সেই বন্যরাই সবুজের স্নেহছায়া ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসছে।যারজন্য মানুষের অকালে মৃত্যু হচ্ছে। বেপরোয়া প্রাণীদের থাবায় থেমে যাচ্ছে তরতাজা মানুষের জীবন।উন্মত্ত অবোধ প্রাণীদের আক্রমণের মুখে পড়ে সর্বস্ব হারাতে বাধ্য হচ্ছেন নিরীহরা।জীবন থেকে সম্পত্তি সবই চলে যায় হাতির আক্রমণে।অরণ্যচারীদের অন্দরমহলে ঢুঁ মেরে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা কারণ খুঁজে বের করছে, তবুও এই জটিল সমস্যার সুরাহা কিছুতেই হচ্ছে না। দেখে নেব এমন কিছু ঘটনা যা জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল।
উত্তরবঙ্গে বেড়েছে বণ্যপ্রাণীদের অনুপ্রবেশ। ২০২২এ জলপাইগুড়ির বিন্নাগুড়ি সেনা হাসপাতালে ঢুকে পড়ে হাতি।একইবছরে জলপাইগুড়ি শহরেও চলে আসে হাতির পাল।২০২৩এ টুকুরিয়াঝার জঙ্গল থেকে শিলিগুড়ি সংলগ্ন আপার বাগডোগরার ভুজিয়াপানি গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন পাড়া এলাকায় ঢুকে পড়ে একটি দলছুট দাঁতাল।পরের বছর অর্থাত্ ২০২৪এ শিলিগুড়ির একটু দূরে বৈকুণ্ঠপুর ডিভিশনের ছোটা ফাপড়ির নেপালি প্রাইমারি স্কুলে মিড ডে মিলের ঘরে ঢুকে তাণ্ডব চালায় দাঁতাল। গুদামঘরের সামগ্রী খেয়ে আবার ফিরে যায় জঙ্গলে৷ ডুয়ার্সের জঙ্গল লাগোয়া লোকালয়ে প্রায় প্রতিদিনই বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়ছে।হাতির হানায় বহু ঘর বাড়ি ভাঙা পড়েছে। হাতির হানায় প্রাণহানিরও ঘটনা ঘটেছে। এই অবস্থায় বন সুরক্ষা কমিটির তরফে হানাদারি রুখতে প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে।দেওয়া হয়েছে ৪০০পরিবারকে সার্চলাইট।
বনদফতরের তথ্য বলছে, প্রতিদিন ইস্টার্ন ডুয়ার্স এলিফ্যান্ট রিজার্ভে কমপক্ষে তিন লক্ষ গবাদি পশুর বেআইনি অনুপ্রবেশ ঘটে। সেই অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে রয়েছে মোষ, গোরু, ছাগল ও প্রচুর পরিমাণে শুয়োর। জঙ্গলের তৃণভোজীদের খাবারের জন্য গবাদিপশুদের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। কুড়ি বছর আগে ডুয়ার্সের জঙ্গলে যে পরিমাণে গবাদি পশু ঢুকতো, এখন তা প্রায় ৬ গুণ বেড়ে গিয়েছে। সঠিক সংরক্ষণের কারণে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তৃণভোজী বন্যপ্রাণীর সংখ্যা। আর বাঘ না থাকায় খাদকের অভাবে রমরমা আরও বেড়েছে বন্য তৃণভোজীদের। সবমিলিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষার স্বার্থে সচেতনতা বাড়ানোর মতোই সবুজ অঞ্চল বাড়ানো জরুরি বলে অনেকের অভিমত।