
The Truth of Bengal: কালী সাধনার তীর্থক্ষেত্র বলা হয় বীরভূম জেলাকে। শক্তিপীঠ ও সতীপীঠ মিলিয়ে এই জেলায় আছে অনেক বিখ্যাত মন্দির। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসে সেইসব মন্দিরে। তবে এই জেলার মন্দিরগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে তারাপীঠ মন্দির। রাজ্য তো বটেই অন্যান্য রাজ্য থেকেও পুণ্যার্থীদের ভিড় উপচে পড়ে এই মন্দিরে। এখন মন্দিরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে পর্যটনক্ষেত্র। আশপাশে ছড়িয়ে থাকা অন্য মন্দিরগুলিকে কি আরও আকর্ষণীয় করা যায় না? মন্দিরগুলিকে কেন্দ্র করে কি গড়ে তোলা যায় না নয় পর্যটনক্ষেত্র? পর্যটনকে বরাবর উৎসাহ দিয়ে আসা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে উদ্যোগী হন। সতীর ৫১ পীঠের মধ্যে বীরভূমে আছে মোট পাঁচটি সতীপীঠ। তার মধ্যে অন্যতম বোলপুরের কঙ্কালীতলা।
একদিকে তারাপীঠ মন্দিরে যখন ভিড়ে গমগম করে, তখন সতীপীঠ কঙ্কালীতলা মন্দিরে তেমন ভিড় দেখা যেত না। অল্পকিছু মানুষ আসতেন পুজো দিতে। সন্ধ্যার পর মানুষজনকে খুব একটা দেখা যেত না এখানে। সেই কঙ্কালীতলা মন্দিরে শুরু হয়েছে বেনারসের আদলে সন্ধ্যারতি। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছায় সেই সন্ধ্যারতি চালু হয়েছিল কয়েক মাস আগে। একসময় যে মন্দির চত্বরে তেমন ভিড় দেখা যে না, এখন সেই কঙ্কালীতলা মন্দিরে সন্ধ্যারতি দেখতে উপচে পড়ছে ভিড়। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসছে এখানে। সন্ধ্যারতির হাত ধরে বদলে গিয়েছে মন্দিরের পরিবেশ। খুশি পর্যটকরা। বহু মানুষের সমাগম হওয়ায় আশপাশের দোকানগুলিতে বেড়েছে বিক্রিবাটা। গাড়ি ব্যবসায়ীদের আয়ও বেড়েছে। এলাকার অর্থনৈতিক মানচিত্র বদলে গিয়েছে কঙ্কালীতলা মন্দিরের সন্ধ্যারতির হাত ধরে।
কথিত আছে, কঙ্কালীতলার কুণ্ডের সঙ্গে কাশীর মণিকর্ণিকা ঘাটের সরাসরি সংযোগ আছে। সেই কঙ্কালীতলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নানা রকম অলৌকিক ঘটনা। কঙ্কালীতলা গুপ্ত তন্ত্রসাধনার জন্য খুবই বিখ্যাত। তাই পর্যটকদের কাছে এই স্থান বেশ আকর্ষণীয়। এখন সন্ধ্যারতির হাত ধরে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে কঙ্কালীতলা মন্দির। বীরভূম জেলার বোলপুর থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে কোপাই নদীর তীরে শক্তিপীঠ কঙ্কালীতলা। তন্ত্রচূড়ামতির মতে, এটি ২৮ নম্বর সতীপীঠ। প্রাচীনকালে এই জায়গাটি কাঞ্চি নামে প্রসিদ্ধ ছিল। তন্ত্রচূড়ামনিতেও এই স্থানের উল্লেখ আছে। পীঠ নির্ণয়তন্ত্র অনুসারে এখানে সতীর কাঁখ অর্থাৎ কোমরের হাড় পড়েছিল, সেই কারণে এই পীঠের নাম হয় কঙ্কালীতলা। শান্তিনিকেতনে বেড়াতে আসা পর্যটকরা এখন একবার হলেও ঘুরে যাচ্ছেন কঙ্কালীতলা মন্দির থেকে। শুধুমাত্র সন্ধ্যারতির হাত ধরে বদলে গিয়েছে এই মন্দিরের পরিবেশ।