বিদায়বেলায় গ্রামের বীর সন্তান শহিদ ঝন্টু শেখ, কান্নায় ভাসল পাথরঘাটা
Patharghata bursts into tears as village hero Jhantu Sheikh dies

Truth Of Bengal: নদিয়ার তেহট্টের পাথরঘাটা গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। চিরঘুমে ঢলে পড়লেন গ্রামের বীর সন্তান, শহিদ জওয়ান ঝন্টু আলি শেখ। চোখের জল আর বাঁধ মানছে না কারও। শেষবার ঝন্টুকে একবার দেখার জন্য ভিড় করেছেন হাজারো মানুষ। গোটা গ্রামজুড়ে একটাই সুর— “ভারত মাতা কি জয়”।
কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন। সেই ঘটনার পর উধমপুরে সেনা ও জঙ্গিদের গুলির লড়াইয়ে শহিদ হন ঝন্টু। বৃহস্পতিবার পরিবারের কাছে আসে মৃত্যুর খবর। পরদিন রাতেই তাঁর দেহ কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছয়, সেখান থেকে বারাকপুর সেনা ছাউনিতে নিয়ে গিয়ে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার।
শনিবার সকালে পাথরঘাটায় পৌঁছায় তাঁর কফিনবন্দি দেহ। তখন গ্রামবাসীদের ঢল উপচে পড়ছে রাস্তায়। বৃদ্ধ বাবা ছেলের কফিন দেখে ভেঙে পড়েছেন কান্নায়, মা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না সন্তানের এমন মৃত্যু। সদ্য স্বামীহারা স্ত্রীর চোখে অশ্রু, কিন্তু মুখে দৃঢ় কণ্ঠে দাবি— “আমার সন্তানরা বাবাকে হারিয়েছে, দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।”
২০০৮ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ঝন্টু শেখ। সংসার পাতেন, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন কাশ্মীরে। শেষবার ফেব্রুয়ারিতে গ্রামে এসেছিলেন। কেউ ভাবতেও পারেননি, এভাবে কফিনে ভরে ফিরবেন গ্রামের ছেলে।
ঝন্টুর দাদাও সেনাবাহিনীর সদস্য। ভাইয়ের কফিন নিজের কাঁধে বহন করে এনেছেন। দাদার কণ্ঠেও একই কথা— “আমি গর্বিত, আমার ভাই দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে।”
আজ ঝন্টুর আত্মবলিদান একদিকে যেমন শোকের সাগর ডুবিয়েছে পাথরঘাটাকে, তেমনই জাগিয়েছে গর্ব, দেশপ্রেম আর কৃতজ্ঞতা।