ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ নিয়ে সুন্দরবনে আতঙ্ক, সাগরে প্রশাসনের কড়া প্রস্তুতি
Panic in Sundarbans over Cyclone Shakti, administration makes strict preparations at sea

Truth Of Bengal: সৌরভ নস্কর, গঙ্গাসাগর: বঙ্গোপসাগরের উপর সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ এখন ধীরে ধীরে শক্তি বৃদ্ধি করে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। যদিও এই ঝড় সরাসরি পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর, তবুও সুন্দরবনের শুরু হয়েছে আতঙ্ক। বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী ব্লকগুলি এবং গঙ্গাসাগর এলাকায় প্রশাসনিক সতর্কতা তুঙ্গে।
আলিপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপটি এখন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করেছে শ্রীলঙ্কা — ‘শক্তি’। এর মূল ল্যান্ডফল হওয়ার সম্ভাবনা গুজরাটের কচ্ছ উপকূল ও পাকিস্তানের করাচিতে থাকলেও, প্রভাব পড়তে পারে সুন্দরবনের বিভিন্ন দ্বীপ অঞ্চলে।
এই প্রেক্ষিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর ব্লক প্রশাসন তৎপর হয়ে উঠেছে। কপিলমুনি আশ্রম সংলগ্ন গঙ্গাসাগরের সমুদ্র সৈকতে চলছে লাগাতার মাইকিং, পুণ্যার্থীদের সতর্ক করা হচ্ছে এবং স্নানের পর দ্রুত নিরাপদ স্থানে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্বল নদী বাঁধ সংলগ্ন এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে সেখানে বসবাসকারী মানুষদের অস্থায়ী ফ্লাড সেন্টার বা স্কুলে স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার, পানীয় জল ও প্রাথমিক চিকিৎসার সামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে।
সাগরের বিডিও কানাইয়া কুমার রাও জানিয়েছেন, “ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সমস্ত দফতরকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় স্থানীয় স্কুল ও ফ্লাড সেন্টার গুলিকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা এলাকায় ঘুরে ঘুরে সচেতনতা প্রচার চালাচ্ছেন।”
জেলার প্রশাসনিক স্তরেও তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী প্রত্যেকটি ব্লকে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। জেলাশাসক থেকে শুরু করে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর — সবাই সতর্ক এবং সমন্বয়ে কাজ করছে। যদিও বাংলা আপাতত ‘শক্তি’র আছড়ে পড়া থেকে মুক্ত, তবে তার প্রভাবে বৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস, এবং ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় শক্তি নিয়ে রাজ্যে বড়সড় বিপদের আশঙ্কা না থাকলেও, সুন্দরবনের মতো স্পর্শকাতর অঞ্চলে কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ প্রশাসন। সতর্কতাই এখন একমাত্র রক্ষাকবচ।