রাজ্যের খবর

ভিক্ষা থেকে শিক্ষার আলোয়, দুই গরিব শিশুর সহায় হলেন ওসি

OC helped two poor children

The Truth of Bengal: পরনে উর্দি, হাতে লাঠি, কোমরে গোঁজা রিভলভার। পুলিশকে এইভাবে দেখতে অভ্যস্ত মানুষ। আইনরক্ষায় কঠোর পুলিশের যে একটা মানবিক মন আছে তা দেখালেন পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার ওসি প্রসেনজিৎ দত্ত। ভিক্ষা থেকে শিক্ষার আলোয় আনলেন দুই শিশুকে। ওই পুলিশ অফিসার টহল দেওয়ার সময় দুই শিশুকে দেখতে পান। দেখেন পথের ধারে বসে ভিক্ষা করছে ওই দুই শিশু। তৎক্ষণাৎ তিনি গাড়ি থেকে নেমে ওই নাবালকের কাছে গিয়ে তাদের নাম ঠিকানা পরিচয় জানেন। কেন তারা এই কাজ করছে সে বিষয়ে খোঁজখবর নেন। ওসি জানতে পারেন, তাদের বাড়ি ভাতারের সন্তোষপুর গ্রামে। বাবা শেখ আশরফ শারীরিক ভাবে অক্ষম। মা কাঁথা স্টিচের কাজ করেন। তাতে সংসার চলে না। তাই তারা বাধ্য হয়ে স্কুল ছেড়ে ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন করেছে।

ওসি প্রসেনজিৎ দত্ত এরপর মুদিখানা থেকে শুরু করে অনেক কিছু সামগ্রী কিনে যান আশরফের বাড়ি। দুই শিশু ইসমাইল শেখ ও আশরাফিল শেখের সমস্ত পড়াশোনার দায়িত্ব নেন। ওই দুই শিশুর মা চম্পা বিবি জানান, স্বামী অসুস্থ। সরকার থেকে পাওয়া একটি ঘরে কোনওরকমে বাস। এখন সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হছে। তাই লোকলজ্জার মাথা খেয়ে দুই শিশু সন্তানকে এই কাজে নামান বলে জানান মা চম্পা বিবি। থানার বড়বাবুর আশ্বাসে সন্তানদের আর ওই কাজে পাঠিয়ে ফের স্কুলে পাঠানোর অঙ্গীকার করেছেন মা। দুই ভাইয়ের পড়াশোনার সমস্ত দায়িত্ব নেওয়া ওসি এলাকার মানুষের কাছে আবেদন রাখেন মানবিক হয়ে একটু সহযোগিতার হাত বাড়িতে দিতে।

যাতে ওই দুই শিশু শিক্ষার আলোয় ফিরতে পারে। ওসি-র এমন মানবিক ভূমিকায় খুশি এলাকার মানুষ। কাঠিণ্যের বর্ম পরে পুলিশ আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করে। কিন্তু তার বাইরেও পুলিশ অনেক সামাজিক কাজে নিয়োজিত থাকে। বাহিনীর উদ্যোগের পাশাপাশি অনেক পুলিশকর্মী ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেক মানবিক কাজ করেন। ভাতার থাকার ওসি রাস্তা থেকে তুলে এনে যে ভাবে ভিক্ষা থেকে শিক্ষার আলোয় ফেরালেন তাতে খুব খুশি এলাকার মানুষ। থানার বড়বাবু প্রসেনজিৎ দত্ত দেখালেন একটা মানবিক মন থাকলে সমাজের জন্য কতটা করা যায়।

Related Articles