
The Truth of Bengal: বাবা একসময় ফূটবল খেলেতেন। এখন চায়ের দোকান চালান। সেই চা দোকানির মেয়ে ঝড় তুলছেন খেলার মাঠে মাঠে। হুগলি জেলার বলাগড়ের বাসিন্দা মৌমিতা মণ্ডল। ছেলেবেলা থেকেই তাঁর শখ ছিল দৌড়ে বিশ্বজয় করার। কিন্তু যে ঘরে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। কোনও ভাবে হয়তো পড়াশোনা করা যাবে। কিন্তু, তাঁর বাইরে খেলাধুলোর খরচ বহন করা অসাধ্য বাবার পক্ষে। তাই স্বপ্ন দেখলেও বাধা ছিল অনেকটাই। কিন্তু, লক্ষ্যে অবিচল থাকলে অনেক সময় কোনও কিছু বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। সেটা প্রমাণ করলেন মৌমিতা। গোটা রাজ্য যখন মাতৃবন্দনায় মেতেছিল, সেই সময় চণ্ডীগড় অ্যাথলেটিক্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত তৃতীয় জাতীয় অনূর্ধ্ব ২৩ অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় জোড়া পদক পেলেন মৌমিতা।
১০০ মিটার হার্ডলসে চ্যাম্পিয়ন হন। তবে লং জাম্পে তৃতীয় স্থান পেয়ে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেন মৌমিতা। হুগলির বলাগড় ব্লকের জিরাটের কালিয়াগর নট্যপাড়ায় বাড়ি সুভাষচন্দ্র মণ্ডলের। জিরাট স্টেশনের ওপরে রয়েছে ছোট্ট একটা ঝুপড়ি চায়ের দোকান। আয় সামান্য। ওই টাকাতেই চলত চারজনের পেট। ভাঙা ঘর, তাতেই কোনওরকমে মুখে হাসি আর পেটে খিদে নিয়ে কাটিয়ে দিতে হতো চারজনকে। মা সোমা মণ্ডলও খেলাধুলোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে তিনি আর্থিক অবস্থার জন্য বেশিদূর যেতে পারেননি।
তিনি মেয়ের সাফল্যে তাদের ইচ্ছাপুরণ হোক।খেলাধুলোর দৌলতে চলতি বছর মার্চ মাসে ইস্টার্ন রেলওয়েতে গ্রুপ সি পদে চাকরি পেয়েছেন মৌমিতা। ২১ বছরের মৌমিতা গত দু’বছর ধরে রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশনে ঘাম ঝরিয়ে সারছেন অনুশীলন। তাঁর লক্ষ্য অলিম্পিক। ঘরভর্তি মেডেল আর চোখ ভর্তি স্বপ্ন। এখনও এগিয়ে যাওয়ার অনেকটা পথ বাকি। তাঁর চলার পথে শরিক হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন অনেকেই। সবাই চান, লম্বা রেসের ঘোড়া হয়ে জেলা থেকে রাজ্য। আর রাজ্য থেকে দেশ হয়ে বিশ্ব ময়দানে ছুটে যান মৌমিতা।
Free Access