রাজ্যের খবর

কনক চূড়া ধানের চাষ, মোয়ার রসদের জোগান

Kanak chura rice cultivation

The Truth of Bengal: শীতের কাঁপন ধরতেই নলেনের ডাক পড়ে। খেজুড়গাছে হাঁড়ি বাঁধা হয়। রসিকজনদের সেই মনপসন্দ খাবারের পয়লা তালিকায় রয়েছে জয়নগরের মোয়া। জিআই ট্যাগ পাওয়া সেই মোয়ারই এখন বিশ্ববাজারে মারকাটারি চাহিদা। রসগোল্লা,সন্দেশের মতোই বাংলার এই মোয়া আলাদা স্বাদের বাহার তৈরি করেছে।তাই মজা করে মোয়া প্রেমীরা বলেন,এ স্বাদের ভাগ হবে না। এখন মোয়ার বাজার চাঙ্গা হওয়ায় বাংলার সরকারও এই মোয়াকে লক্ষ্মীলাভের রসদ করে তুলছে।খুলে দিতে চাইছে রোজগারের পথ। জয়নগরের মোয়ার স্বাদ বাড়ায় কনকচূড়া ধান।

আগে এই কনকচূড়া ধান আনতে গেলে জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীদের জেলার নানা প্রান্তে ছুটতে হত।কনকচূড় ধানের চাষ মূলত হয় রায়দিঘির কাশীনগর , মন্দিরবাজারের লক্ষ্মীকান্তপুরে। মোয়ার মরশুম শুরুর আগে এইসব এলাকা থেকে ধান নিয়ে গিয়ে  মোয়া তৈরি   হতো। এতে খরচও যেমন বেশি পড়ত, তেমনই গুণগত মান বজায় রাখতে গিয়ে নানা সমস্যা হতো।তাই প্রশাসন এই মোয়ার উপকরণের জোগান বাড়াতে জয়নগরেই কনকচূ়ড়়া ধান চাষের ব্যবস্থা করেছে। এখন সেই কনকচূড়া ধান কাটার তোড়জোড় চলছে।মাঠে মাঠে কাস্তের ঝনঝনানি।চাষিরা বলছেন, কথিত আছে,উনিশ শতকে এই মোয়ার আবিস্কার হয়।

মোয়ার আবিস্কার করেন জয়নগরের  বহুড়ু গ্রামের জনৈক যামিনী বুড়ো। জানা যায়,একটি অনুষ্ঠানে তিনি নিজের খেতে উৎপাদিত কনকচূড় ধানের খই ও নলেন গুড় দিয়ে মোয়া প্রস্তুত করে পরিবেশন করেছিলেন।এরপরে মোয়ার জয়যাত্রা শুরু হয়। আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ধীরে ধীরে এই মোয়া জয়নগর শহর এবং গোটা বাংলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেই তখন থেকেই ব্যবসায়িক ভিত্তিতে মোয়া তৈরী হতে শুরু করে। ১৯২৯ সালে পূর্ণচন্দ্র ঘোষ ওরফে বুঁচকি বাবু এবং নিত্যগোপাল সরকার জয়নগরে প্রথম মোয়া তৈরীর কারখানা ও দোকান স্থাপন করেন। এখন সেই জয়নগরের জগদ্বিখ্যাত মোয়াই বিশ্বখ্যাত হয়ে উঠেছে। তাই খাস খাবারের তালিকায় জায়গা পাওয়া এই মোয়াকে এবার নতুন ফ্লেভারে তৈরির উদ্যম বেশ লক্ষ্যণীয়।

Related Articles