ক্যান্সার জয় করে শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী
Higher Secondary Exam Candidate Dreams of Becoming a Teacher After Conquering Cancer

Truth Of Bengal: ক্যান্সার জয় করে শিক্ষিকা হওয়ার ইচ্ছেপূরণ করতে লড়াই করছেন সুজলি পাত্র। হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছেন উচ্চমাধ্যমিক। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর তাঁর লড়াইটা আরও কঠিন হয়। মামার বাড়িতে থেকেই পড়ছেন। জীবনযন্ত্রণাকে পাশে সরিয়ে রেখে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখাতে চান সুজলি। নারী দিবসে এই লড়াকু মেয়েকে নিয়েই আমাদের বিশেষ প্রতিবেদন।
গতবছর কেমো চলছিল, তাই পরীক্ষা দিতে পারেননি, এবার যন্ত্রণা কাতর হয়েও হাসপাতালে বসে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন চন্দননগরের সুজলি পাত্র। ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ায় লৌহকঠিন মন নিয়ে জীবনের বাধা পেরিয়ে পড়াশোনা করছেন। সুজলির মা মারা যান মাত্র এগারো দিনে। তারপর থেকেই চন্দননগর কেএমডিএ পার্কের পাশে মামার বাড়িতে বড় হয় সুজলি মাত্র। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে আলাদা সংসার পাতায় তাঁর লড়াইটা কঠিন হয়ে পড়ে।তবে মামা সত্যজিৎ রায়ই তাকে বড় করেছেন।
প্রাক্তন জুটমিল শ্রমিক সত্যজিত রায়ের স্নেহে পড়াশোনার প্রেরণা পান উচ্চ মাধ্যমিকের এই পরীক্ষার্থী। জীবন যন্ত্রণাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে এই সংগ্রামী পড়ুয়া, জীবনের উড়ান শিখরে জায়গায় নিয়ে যাওয়ার সঙ্কল্প নিয়েছেন তিনি। মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়ার পর উচ্চশিক্ষায় বড়সড় ছাপ রাখার লড়াই শুরু করেছেন এই লড়াকু পড়ুয়া। সুজলী চন্দননগর লালবাগান বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী।এগারো ক্লাসে পড়ার সময় তার অসুস্থতা ধরা পরে। জানা যায় ওভারিতে টিউমার রয়েছে।বায়োপসিতে ধরা পরে ক্যান্সার।এরপর শুরু হয় কেমো থেরাপি।মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে পাশ করেছিলেন সুজলি। অসুস্থতার কারণে গতবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারেননি।
তবে তার মনের জোর ছিল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবেন।সেই মতো চলছিল প্রস্তুতি। চন্দননগর কৃষ্ণভাবিনি নারী শিক্ষা মন্দিরে পরীক্ষার সিট পড়ে।প্রথম দিন বাংলা পরীক্ষা দেওয়ার পরই আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। সারারাত পেটে যন্ত্রণায় ঘুমতে পারেননি। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অর্পিতা মন্ডল জানান,তাকে ফোন করে শরীর খারাপের কথা জানায় সুজলি।আর পরীক্ষায় বসতে পারবে কিনা তানিয়ে দ্বিধা তৈরি হয়। স্থানীয় চিকিৎসক দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন।দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা স্কুলেই দেন। প্রধান শিক্ষিকা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের হুগলি জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক শুভেন্দু গড়াই এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নীলরতন সরকার হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়।ছাত্রী জানায় হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষা দেবে।