রাজ্যের খবর
Trending

পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত লালমাটির জেলার লোকসঙ্গীত শিল্পী রতন কাহার

Folk singer Ratan Kahar of Lalmati district has been honored with the Padma Shri

The Truth Of Bengal: পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত লালমাটির জেলার লোকসঙ্গীত শিল্পী রতন কাহার। দিল্লি থেকে তাঁর কাছে রাষ্ট্রীয় সম্মানের কথা জানানো হয়।তাতে উচ্ছ্বসিত  শিল্পীর পরিবার। জীবনের প্রান্ত সীমায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকশিল্পী রতন কাহারের কাছে আনন্দের লহর বয়ে এনেছে এই পুরস্কার।

লোকগান বরাবরই মনোরঞ্জনের মাস্টারপিস বলা যায়।গ্রাম বাংলার মানুষের মন মাত করেছে বরাবরই মাটির গান বলা হয়। লোকসঙ্গীতের মধ্যে রয়েছে ভাদু, বাউল গান, জারি, সারি, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, মুর্শিদী, গম্ভীরা, কবিগান ।সেই লোকসুরের জগতে নিঃশব্দ বিপ্লব ঘটান রতন কাহার।১৯৭২এ তাঁর মন ছুঁয়ে যাওয়া সুর সুরের জগতে সাড়া ফেলে।

১৯৭৬ সালে এই গানটি প্রথম রেকর্ডিং করেন স্বপ্না চক্রবর্তী। এখনো পর্যন্ত বেশ জনপ্রিয় গান এবং গানটির জন্য জিতে নেন গোল্ডেন ডিস্ক পুরস্কার। শুধু তাই নয় রতন কাহার তৈরি করেছেন অজস্র ঝুমুর গান, পুরস্কার এবং শংসাপত্র তিনি এতটাই পেয়েছেন যে, একচিলতে তার ভাঙ্গা ঘরে সে সব রাখার জায়গা হয়নি। দারিদ্রতার সঙ্গে যুঝতে যুঝতে তিনি একটা সময় গান ছেড়ে দেন। ছেলে, মেয়ে সংসার নিয়ে তার জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছিল। মেয়ে খুব ভাল গান গাইতেন, কিন্তু তাকে একটি হারমোনিয়াম পর্যন্ত কিনে দিতে পারেনি। পাহাড়ি সান্যাল, আর্য চৌধুরী, আনন্দ রাজকুমার সাহারা নিয়মিত তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। তবে নতুন প্রজন্মের মধ্যে শিলাজিৎ এর জন্য তিনি অনেক ভাদুগান লেখে তিনি।বর্তমানের বয়স ৮৮ বছর।জীবনের প্রান্ত সীমায় পৌঁছে গিয়েছেন।এই সময়ে এখন চোখে আনন্দাশ্রু চলে আসছে।কারণ সারাজীবনের কাজের এবার রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত তিনি। পদ্মশ্রী পুরস্কারের জন্য বাছা হয়েছে লালমাটির জেলার এই সাদাকালো জীবন দর্শনে বিশ্বাসী মানুষটিকে।

কুমারী মায়ের অবহেলিত সন্তানের চুল বেঁধে দেওয়ার সময়ের গুনগুনানি নিয়েই এই গানের বাহার। মা আপন মনে স্বপ্নে বিভোর হন, তার মেয়ে যেন ঐ বড়লোকদের ‘বিটি’ যার লম্বা লম্বা চুল। আর সে মেয়ের চুল আদরে ভালবাসায় লাল গেন্দা ফুলে সাজিয়ে দিচ্ছে। এক কুমারী অচ্ছুৎ মায়ের এমন স্বপ্ন কাজল চোখের গল্প গানে তুলেছিলেন রতন কাহার।

রতন কাহারকে পদ্মশ্রী সম্মানের জন্য বেছে নেওয়ার ছড়িয়ে পড়তেই বীরভূমের বাসিন্দাদের মধ্যে আনন্দের সীমা নেই। অনেকেই বলছেন অবশেষে তিনি যোগ্য সম্মানটুকু পেলেন, মাটির মানুষদের আবেগ অনুভূতি সম্পর্কে পরিচিত এই শিল্পী ভাদুর মতোই  টুসু, আলকাব, ঝুমুরের মতো গান   রচনা এবং পরিবেশন করে থাকেন। তবে তার জীবনে সবচেয়ে বড় আলোচনার গানটি হল ‘বড়লোকের বিটি লো’।

এই গান নিয়ে চরম বিতর্ক রয়েছে। এমনকি এই গান নিয়ে বছর কয়েক আগে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন র‍্যাপ সিঙ্গার বাদশা। তিনি রতন কাহারের অনুমতি ছাড়াই এই গান ব্যবহার করেছিলেন। যদিও পরবর্তীতে বিষয়টি তার কানে গেলে তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন এবং রতন কাহারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছিলেন।লড়াই সংগ্রামের নানা পথ পেরিয়ে আসা এই সাদামাটা শিল্পীর  এই সৃষ্টির স্বীকৃতি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে পৌঁছে যাক,চান সকলে।

Free Access

Related Articles