প্ল্যাস্টিকের রমরমার যুগে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশের সামগ্রী, টিকে থাকার কঠিন লড়াইয়ে কারিগররা
Bamboo products seem to be disappearing from the lives of artists and artisans of Birbhum

The Truth of Bengal: একসময় বাঁশের তৈরি উপকরণের কদর ছিল বেশি। এখন প্ল্যাস্টিকের রমরমার যুগে বাঁশের সামগ্রীর বাজার মিলছে না। তাই বীরভূমের শিল্পী-কারিগরদের জীবন থেকে যেন হারিয়ে যেতে বসেছে স্বপ্ন বোনার কাজ।তাই প্ল্যাস্টিকের মতো বিপদকে ছেড়ে মানুষ যদি প্রকৃতির দানকে গ্রহণ করে তবে এই শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে লালমাটির জেলার কারিগরদের অভিমত।
একসময় যতীন্দ্রমোহন বাগচি লেখেন,বাঁশ-বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই, মাগো আমার শ্লোক বলা কাজলা দিদি কই? কিন্তু এখন সেই বাঁশ বাগান আর বড় একটা দেখা যায়না। গ্রামবাংলায় কমেছে বাঁশের ঝাড়। সবুজ ফিকে হওয়ার মতোই বাঁশবাগানের ঘন ছায়া এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই কারিগররা বাঁশ খুঁজে আনতে গিয়ে বড় সমস্যায় পড়ছেন।তবুও পেশাকে বাঁচিয়ে রাখতে বীরভূমের কারিগররা বাঁশের কারুকাজের মাধ্যমে বাজার ধরে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু সবার মাঝে বাঁশের বলিষ্ঠ ব্যবসাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে প্ল্যাস্টিক। প্ল্যাস্টিকের ব্যবহার বাড়ায়, সাধারণ মানুষ এখন আর বাঁশের ডালি,ঝুড়ি, কুলো,বা ফুলদানি বড় একটা ব্যবহার করেন না। তাই প্ল্যাস্টিকের দাপট বাড়ায় বাঁশের তৈরি জিনিস টিকে থাকার কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়েছে। সেভাবে আর চাহিদা নেই,হস্তশিল্পীদের কাজের। বাঁশের জিনিসের দর কমায় বাজার অর্থনীতির যুগে তাঁরা চোয়াল শক্ত করে লড়াইয়ের পাঞ্জা কষছেন ময়ূরেশ্বরের ষাটপলসা গাঁয়ের কারিগররা।
বলছেন, এক সময় বাঁশের তৈরি ধামা-কুলো বিক্রির চাহিদা ছিল তুঙ্গে বর্তমানে প্ল্যাস্টিক-ফাইবারের কারবার বাড়ায় বাঁশের ধামা-কুলোর চাহিদা একদম নেই কয়েক বছর আগেও এ অঞ্চলে বাঁশ সহজলভ্য ছিল।এখন একটি বাঁশের দাম প্রায় দেড়শো থেকে দু’শো টাকা।সেই তুলনায় বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি। বর্তমানে লাভও তেমন ভাবে হয় না। নিজেদেরই বিভিন্ন হাটে গিয়ে ফেরি করে এসব পণ্য বিক্রি করতে হয়।তবে,বাঁশের তৈরি পণ্যের স্থানে দখল করে নিচ্ছে প্লাস্টিক ও কাঠের তৈরি জিনিসপত্র। তবুও শিল্পীরা বাঁশের তৈরি সামগ্রীতে বৈচিত্র্য এনেছেন।ধামাকুলোর মতোই ঝুড়ি,চেয়ার,খাট, দোলনা সহ নানা সৌখিন সামগ্রী বানিয়ে ফেলছেন কারিগররা। রকমারী জিনিস বানালেও সেইসব জিনিসের চাহিদা নেই একদম। যে সমস্ত জিনিসের দাম ৫ হাজার টাকা হওয়া প্রয়োজন সেই সমস্ত জিনিস ৫০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ফলে আর্থিক সংকটে দিন কাটছে তাদের।