হাঁসখালিতে কৃষি সংকট, চারা অবস্থাতেই পাট ফসল নষ্টের পথে
Agricultural crisis in Hanskhali, jute crop on the verge of destruction even in seedling stage

Truth Of Bengal:মাধব দেবনাথ, নদিয়া: নদিয়ার হাঁসখালীর শান্তিনগর গ্রামের হাতিবান্ধা মৌজার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এবছর চাষ হয়েছে অর্থকরী ফসল—পাট। দুর্গাপুজোর আগেই সেই পাট বিক্রি করে বছরে একবার অর্থনৈতিক স্বস্তি পান এখানকার কৃষকেরা। এবছরও চাষের শুরুতে আশার আলো দেখেছিলেন তাঁরা, কারণ জমিতে পাটগাছ বেশ ভালোই হয়েছিল। কিন্তু আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার কারণে সেই আশায় কার্যত জল ঢেলে দিয়েছে প্রকৃতি।
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতের ফলে জমিতে জল জমে যাওয়ায় চারা অবস্থায় পাটগাছ মারা যেতে শুরু করেছে। কৃষকরা জানাচ্ছেন, পাট লাগানোর সময় বৃষ্টির অভাবে ডিজেলচালিত পাম্প দিয়ে জল দিতে হয়েছে, তখন খরচও বেড়েছিল। আর এখন অতিরিক্ত বৃষ্টির জেরে জমিতে জল দাঁড়িয়ে থাকায় গাছের গোড়া পচে যাচ্ছে, যা চাষের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এলাকার বহু কৃষক মহাজনের কাছ থেকে সুদে টাকা ধার করে পাট চাষ করেছেন। এখন যদি এই ফসল শেষ পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সেই ধার শোধ করা তাঁদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সবাই। এক কৃষক নীলকমল বিশ্বাস জানান, “পাটের এই ক্ষতি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যদি সরকার থেকে কোনও সাহায্য না আসে, তাহলে আমরা কীভাবে টিকে থাকব, বুঝতে পারছি না।”
অন্য এক কৃষক জলধর রায় বলেন, “শ্রাবণ মাসের শেষে পাট কাটার কথা ছিল। সব খরচ আগেই হয়ে গেছে। এখন যদি গাছ সব নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে আত্মহত্যা ছাড়া উপায় থাকবে না।”
স্থানীয় কৃষকদের বক্তব্য, একমাত্র সরকারই এই কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়াতে পারে। দ্রুত ক্ষতিপূরণ এবং চাষ পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা না করলে বহু কৃষক পরিবার চরম সংকটে পড়বে।
সারসংক্ষেপে বলা যায়, হাঁসখালির বিস্তীর্ণ পাটক্ষেতে লাগাতার বৃষ্টির জেরে বিপর্যয় নেমে এসেছে। বহু কৃষক চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন এলাকার কৃষক সমাজ।