রাজ্যের খবর

শ্রেষ্ঠ শিকারী হওয়ার লড়াই, বীরের মর্যাদা পেতে লক্ষ্যভেদ

Adivasi archers of Bankura

The Truth of Bengal: সমাজের মধ্যে বীর কে ? অর্জুনের মতো কার দ্রুত লক্ষ্যভেদের ক্ষমতা রয়েছে ?এর প্রমাণ নিতে বাঁকুড়ার আদিবাসীরা তীরন্দাজী পরীক্ষার আয়োজন করে ।যার পোশাকী নাম ভেজা বিন্দা উত্সব।কেন এই ভাবনা? বলা হয়, একসময় আদিবাসী মানুষেরা ছিলেন অরণ্যচারী। চাষাবাদের কৌশল সেভাবে রপ্ত করতে না পারায় জঙ্গলের পশু শিকারই ছিল তাঁদের মূল জীবিকা। জঙ্গলের মাঝে মাঝে থাকা ছোট ছোট গ্রামে বসবাসকারী আদিবাসী মানুষের জীবনের প্রতি মূহুর্তে ছিল স্বাপদের হাতে প্রাণ হারানোর আশঙ্কা।

গহন অরণ্যের স্বাপদের হাত থেকে প্রাণ বাঁচানোর জন্য অরণ্যচারী আদিবাসী মানুষের হাতে অন্যতম অস্ত্র ছিল তীর ধনুক। এই তীর ধনুকে যে যত পারদর্শী সে তত বড় বীর হিসাবে গণ্য হত।সময়ের বদল হলেও আধুনাকিতার ছোঁয়া লাগলেও এখনও এই অরণ্যচারীরা তীর-ধনুকের সংস্কৃতিকে বুকে আগলে রেখেছেন। শীতের আমেজ গায়ে মেখে আদিবাসী মানুষেরা এই লক্ষ্যভেদের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। কেউ লক্ষ্যভেদ করতে পারলেই তাঁর মাথায় চড়ে বীরের পালক।

বীরের মাথায় আদিবাসীদের বিশেষ সম্মানের নতুন পাগড়ি পরিয়ে দেন গ্রামের মাঝি বাবা। তারপর সেই বীরকে কাঁধে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের জগ মাঝির ঘরে। সেখানে সেই বীরের পা ধুইয়ে তাঁকে বাড়িতে স্বাগত জানান জগ মাঝির পরিবারের মহিলারা। তারপর তাঁকে খাইয়ে দাইয়ে বিশেষ সম্মান জানানো হয়। তীরন্দাজীর মাধ্যমে নির্বাচিত ওই বীর নতুন বছর ভর বিশেষ সম্মান পান গ্রামে। সংস্কৃতির পরম্পরায় আজো ভেজা বিন্দা রয়েছে আদিবাসী গ্রামগুলিতে। আদিবাসীদের দাবী শুধু বীর নির্বাচন করাই এই ভেজা বিন্দার মূল উদ্দেশ্য,শত্রুদের দমন করা,অশুভ শক্তিকে বিনাশ করা।

Related Articles