পা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেলেন এশিয়ার প্রথম প্রতিবন্ধী মহিলা
Asia's first disabled woman got her driving license by driving with her feet

The Truth Of Bengal : আচ্ছা গাড়ি চালাতে গেলে মানব দেহের কোন অঙ্গটি অত্যন্ত জরুরি বলুন তো? কেউ হয়তো বলবেন চোখ আবার কেউ বলবেন হাত। দূরের রাস্তা দেখার ক্ষেত্রে চোখ তো অত্যন্ত জরুরী একটি অঙ্গ। তার সাথে রয়েছে হাতের অপরিহার্য ব্যবহার। কিন্তু হাত ছাড়াই দিব্যি চলছে গাড়ি! এও কি সম্ভব? জন্ম থেকে হাত নেই তার। তবে হাতের কোনরকম কোন ব্যবহার ছাড়াই দিব্যি চালাতে পারেন গাড়ি। শুধু তাই নয়, রয়েছে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও। হ্যাঁ গল্প নয় বাস্তব। এবারে সবার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে কার কথা বলছি? আজকের গল্প এমনই এক লড়াকু মেয়ের।
কেরালার বাসিন্দা জিলুমল এম থমাস। জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী এই ৩২ বছরের যুবতী। ছোট থেকে দুই হাত না থাকায় কোনদিনও নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করেননি তিনি। ছোট থেকেই নিজেকে একেবারে অন্যভাবে গড়ে তুলেছিলেন এই লড়াকু মহিলা। স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে গাড়ি চালাবে। ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারানো এই জিলিমল মনে মনে দৃঢ় সংকল্প করে নিয়েছিল একদিন স্বাধীনভাবে বাঁচবে সে। ব্যাস, যেমন কথা তেমন কাজ। সেই অনুযায়ী শুরু হলো কঠোর পরিশ্রম। প্রথমে গাড়ি চালানো শিখল। এবারে মনে প্রশ্ন আসতেই পারে জিলুমলের তো হাত নেই তাহলে গাড়ি চালায় কিভাবে? পা দিয়ে। হ্যাঁ, দুই পা দিয়ে স্টিয়ারিং ধরেন তিনি। বিয়ার বদলান। ব্রেক কষেন। সব। ড্রাইভিং ভালোভাবে শেখার পর। ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ইদুক্কি জেলার থুদুপূজা আরটিওতে আবেদন করেন। আরটিও এর আধিকারিকরা সমস্ত সত্যি জানা মাত্রই এক কথায় নাকচ করে দেন তার আবেদন। কিন্তু ছাড়ার পাত্রি নন জিলুমল। শটান কেরালা হাইকোর্টে মামলা ঠোকেন তিনি।
এরপর আদালতের হস্তক্ষেপের পর ঝিলমলির ড্রাইভিং টেস্ট হয়। সেখানে এমভিভি কর্মকর্তাদের সামনে গাড়ি চালালেও তাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে অস্বীকার করেন কর্তৃপক্ষ। সেখানেও আশা না ছেড়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য রাজ্য কমিশনের কাছে যান তিনি। কমিশন ইন্দরের বিক্রম অগ্নিহোত্রীর উদাহরণ দেন। যিনি ছিলেন দুই হাত না থাকার পরেও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া ভারতের প্রথম ব্যক্তি।
এরপর অবশেষে ড্রাইভিং লাইসেন্স পান জিলুমাল। তিনি জানান, ” এটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল। এখন লাইসেন্স হাতে পেয়ে আমি খুশি। সবচেয়ে বড় বাধা অতিক্রম করতে পেরেছি”।