অফবিট জায়গা ঘুরতে যেতে ভালোবাসেন? অবশ্যই একবার ঘুরে আসুন সিকিমের প্রাচীন ঐতিহ্য বহনকারী শৈল শহর ইয়কসাম
Sikkim's ancient heritage-bearing rock town Yoksam

The Truth of Bengal: পেস্ট্রির মধ্যে থাকা চেরি গুলো বেছে খেতে নিশ্চয়ই আপনার বড়ই ভালো লাগে, কি তাই তো? কিন্তু চোখে কখনও চেরি গাছ দেখেছেন? না দেখে থাকলে আপনাকে অতি অবশ্যই একবার ঘুরে আসতে হচ্ছে সিকিমের হেরিটেজ শহর ইয়কসাম থেকে। পাহাড়ের কোনও এক ঢালে গজিয়ে ওঠা লাল টকটকে চেরি ফলের স্বাদ নেওয়ার পাশাপাশি সিকিমের নানা ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শন ও লেকের ধারে বসে নানা ধরনের মাছ দেখার সুযোগ ও রয়েছে এখানে। ভ্রমনপিপাসুদের কাছে সিকিম হল ছোট খাটো কাশ্মীরের সমান। কাশ্মীর যেতে খরচা পড়ে অনেকটাই। তাই ভ্রমনপিপাসুদের মধ্যে বেশির ভাগই সিকিম যেতে পছন্দ করেন। কম খরচায় ঘোরা পাহাড় দেখা লাদাখের মত লেকের নীল জলের ধারে গিয়ে বসা, বৌদ্ধ মনেস্ট্রি, বরফ এই সবকিছুই রয়েছে সিকিমে। আর সিকিমের মধ্যে যদি কোন অফবিট জায়গায় যাওয়া যায় তাহলে তো কথায় নয়, শান্ত নিরিবিলি সিকিমের এক অফবিট লোকেশন হল ইয়কসাম।
এই লোকেশনের প্রচুর ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। একটু সার্চ করলেই জানতে পারবেন, সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকের আগে ছিল এই ইয়কসাম শৈল শহর। এখানে সিকিমের বহু স্থাপত্যের নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক হওয়ার পর থেকে গ্যাংটকে পর্যটকদের ভিড় বেড়ে গেছে সেই তুলনায় ইয়কসাম শৈল শহর তুলনামূলক নির্জন নিরিবিলি। এই শৈল শহর থেকে দূরের পাহাড়ের ভিউ দেখতে আপনার অসাধারণ লাগবে। এখানকার বাসিন্দারা মূলত চাষাবাদ করেই জীবনযাপন করে থাকেন। এখানে আপনি বহু পাহাড়ি গাছের নার্সারি দেখে নিতে পারেবন। যেখানে অর্কিড থেকে শুরু করে আরও নানা ধরনের পাহাড়ি ফুলের গাছ আপনি দেখতে পারবেন। এখানে একটি বৌদ্ধ মনেস্ট্রিও আছে। যেখানে দূর দূর থেকে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা আসেন মেডিটেশন করতে। সিকিমের রাজার বহু ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে ইয়কসামের সঙ্গে।
এখানে দেখার মত দর্শনীয় স্থান গুলি হল ঐতিহাসিক রয়্যাল প্যালেস, পুরনো মনেস্ট্রি ডুব্দি গুম্ফা, নরবুগাং পার্ক ও আরও কত কি! ইয়কসামে এক সময় ভিআইপিদের আনাগোনা ছিল। যে কারণে এখানে রয়েছে একটি হেলিপ্যাডও। এখান থেকে একটু দূরেই রয়েছে কাথুক লেক। কাঁচের মত স্বচ্ছ জলের সামনের গিয়ে আপনি যখন দাঁড়াবেন আপনার প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠবে এই লেকের জলে। এখানে প্রচুর মাছের দেখা পাওয়া যায়। বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা এই লেককে পবিত্র লেক বলে মনে করেন। যে কারণে এই লেকে স্নান করা যায়না। এই লেক থেকে একটু দূরে গিয়েই দেখতে পাবেন সিকিম রাজার করোনেশন। বিশাল আকার এক পাথরের স্মৃতি সৌধ যা বয়ে নিয়ে যাচ্ছে রাজার করোনেশন স্মৃতি। এখানে প্রচুর চেরি গাছও দেখতে পাবেন আপনি, গাছে যখন চেরি ফল ধরে এই পুরো পাহাড়ি শহর যেন আরও সুন্দর হয়ে ওঠে। কি ভাবছেন? যাবেন তো? ইয়কসামে যেতে গেলে আপনাকে জলপাইগুড়ি হয়ে যেতে হবে। সময় লাগবে প্রায় ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা। এখানে থাকার জন্য পেয়ে যাবেন অসংখ্য হোটেল, পাহাড়ের ঢালে হোমস্টে, আর রিসর্ট। যেখানে আপনি অনায়াসে ৩ থেকে ৪ দিন থাকতে পারবেন।