ভ্রমণ

‘মুখোশ’ গ্রামের মুগ্ধতার প্রেমে পড়ে যাবেন আপনিও

Tourism of West Bengal

The Truth of Bengal: রুখাসুখা হলেও পুরুলিয়ায় যে নৈসর্গিক শোভার সমাহার আছে, তা অন্য জেলায় আর নেই। কী নেই এই পুরুলিয়া জেলায়? প্রকৃতি সব দিক থেকে সাজিয়ে দিয়েছে পুরুলিয়া জেলাকে। কলকাতার প্রায় নাগালেই পুরুলিয়া। সেই পুরুলিয়া যে এত মোহময়ী, তা জানে না অনেকেই। বছরের এক এক সময় পুরুলিয়ার আলাদা আলাদা রূপ দেখতে পাওয়া যায়। পুরুলিয়ায় দেখার জন্য এমন কিছু চমৎকার জায়গা আছে, যে জায়গাগুলি আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধ করবে। আবার সেখানে ফিরে আসতে চাইবেন। আজ আপনাদের নিয়ে যাব পুরুলিয়ার তেমনই এক জায়গায়। একটি বিশেষ গ্রামে। যে গ্রামটির নাম চড়িদা। পুরুলিয়ার বিখ্যাত এবং ঐতিহ্যবাহী ছৌ নাচের কথা কে না জানেন?

রঙিন পোশাক এবং চোখ ধাঁধানো ভারী মুখোশ ব্যবহার করা হয় এই বিশেষ নাচে। সেই মুখোশ তৈরি করা হয় চড়িদা গ্রামে। যে গ্রামটি অযোধ্যা পাহাড়ের কাছাকাছি অবস্থিত। গোটা গ্রামে প্রতিটি বাড়িতে প্রায় মুখোশ তৈরি হয়। তাই গ্রামটিকে মুখোশ গ্রাম বলা হয়। পর্যটকরা গ্রামটিকে মুখোশ গ্রাম নামে চেনে। গ্রামের দোকানগুলিতে উঁকি দিচ্ছে কোথাও দেবদেবীর মুখ, কোথাও বা কোনও বিভীষণ রাক্ষসের প্রতিচ্ছবি। আর সেই মুখের চারপাশে ঝলমল করছে শোলা, রাংতা আর মুকুটের কাজ। অযোধ্যা পাহাড়ের পাদদেশে গ্রাম বাংলার রুক্ষ জীবনের পটভূমিতে রঙিন এই মুখোশগুলি গ্রামটিকে আলাদা করেছে। শুধু জীবিকা নির্বাহ নয়। শিল্পীর ভালবাসা, অধ্যবসায় এবং সংস্কৃতিকে আঁকড়ে থাকার লড়াই ফুটে ওঠে অব্যক্ত সেই মুখোশগুলিতে। শ’খানেক পরিবার বাস করে গ্রামটিতে। প্রায় ঘরে ঘরে রঙিন মুখোশ তৈরি হয়।

বংশ পরম্পরায় গ্রামের প্রতিটি পরিবার ছৌ নাচের মুখোশ তৈরি করে আসছে। এই গ্রামেই আছে ছৌ মুখোশের মিউজিয়াম। এখানে নামি শিল্পীদের তৈরি এবং ব্যবহার করা ছৌ নাচের মুখোশ সংরক্ষিত করা রয়েছে। ওই গ্রামে ঘুরতে গিয়ে আপনিও কিনতে পারবেন হরেক রকমের মুখোশ। কীভাবে যাবেন মুখোশ গ্রামে? হাওড়া থেকে ট্রেনে অথবা বাসে পুরুলিয়া যেতে হবে। সেখান থেকে যেতে হবে বাঘমুণ্ডি। অযোধ্যা পাহাড়ের কোলে থাকা সেই মুখোশ গ্রামে গাড়িতেও যেতে পারেন। শহুরে কোলাহল থেকে দুই একদিনের মুক্ত হতে চান? প্রকৃতির মাঝে সময় কাটিয়ে বিশুদ্ধ তাজা বাতাস নিতে চান? বেরিয়ে পড়ুন পুরুলিয়ার উদ্দেশে। অবশ্যই তালিকায় রাখবেন মুখোশ গ্রাম।

Related Articles