চিকিৎসা প্রযুক্তিতে নয়া সাফল্য, বিশ্বের প্রথম স্যাটেলাইট-ভিত্তিক অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করল চিন
New breakthrough in medical technology, China completes world's first satellite-based surgery

Truth Of Bengal: চিন চিকিৎসা প্রযুক্তিতে এক যুগান্তকারী মাইলফলক স্থাপন করেছে। বিশ্বের প্রথম স্যাটেলাইট-ভিত্তিক দূরবর্তী অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করেছে দেশটি। এই সাফল্য দূরবর্তী ও যুদ্ধক্ষেত্রের মতো চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে জীবন বাঁচানোর সম্ভাবনা ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেবে। Apstar-6D নামের একটি স্যাটেলাইট, যা পৃথিবী থেকে ৩৬,০০০ কিলোমিটার ওপরে অবস্থান করছে, এই অপারেশনগুলো সফল করতে ব্যবহৃত হয়েছে।
কীভাবে সফল হলো এই অস্ত্রোপচার
চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা পাঁচটি অস্ত্রোপচার পরিচালনা করেন। লাসা (তিব্বত), ডালি (ইউনান), এবং সানইয়া (হাইনান) থেকে চিকিৎসকরা এই অপারেশন করেন, যেখানে রোগীরা ছিলেন বেইজিংয়ে। লিভার, পিত্তথলি এবং অগ্ন্যাশয়ে অস্ত্রোপচার করা হয় একটি দেশীয় রোবোটিক সার্জিক্যাল সিস্টেমের সাহায্যে।
অস্ত্রোপচার শেষে রোগীরা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে পরের দিনই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পান বলে চিনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভি নিশ্চিত করেছে।
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও সফলতা
এই অপারেশনে প্রতিটি অস্ত্রোপচারের ডেটা প্রায় ১,৫০,০০০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিয়েছে। এটি চিনের অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক চিকিৎসা প্রযুক্তির অগ্রগতি তুলে ধরে।
সিসিটিভি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, “এই দূরবর্তী অস্ত্রোপচারগুলো চিনের পাহাড়, সমুদ্র এবং বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয়েছে, যা এই প্রযুক্তির নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে।”
Apstar-6D: সাফল্যের চাবিকাঠি
২০২০ সালে উৎক্ষেপিত Apstar-6D উপগ্রহ এই সাফল্যের মূল ভিত্তি। এটি প্রতি সেকেন্ডে ৫০ গিগাবিট ডেটা পরিবহন করতে পারে এবং ১৫ বছরের আয়ুষ্কাল রয়েছে। এটি এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে বিশেষ করে বিমান ও সমুদ্রপথে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে।
এই উপগ্রহটি একাধিক নতুন উপগ্রহের একটি ধারার প্রথম, যা দূরবর্তী ও দুর্গম অঞ্চলে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনে সহায়তা করবে।
ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
এই সাফল্য প্রমাণ করে যে স্যাটেলাইট-ভিত্তিক অস্ত্রোপচার ভবিষ্যতে একটি স্বাভাবিক ও বাণিজ্যিক চিকিৎসা পদ্ধতি হয়ে উঠতে পারে। এটি ভূখণ্ডগত সীমাবদ্ধতাগুলো অতিক্রম করে যে কোনো স্থানে ২৪/৭ জরুরি চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেবে।
চিনের এই অর্জন শুধু চিকিৎসা প্রযুক্তিতে নয়, স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।