ডার্বিতে কেউ এগিয়ে থাকে না, ডার্বি সবসময়ই ফিফটি-ফিফটি:বিকাশ পাঁজি, প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার
Nobody is ahead in derby, derby is always fifty-fifty

Truth Of Bengal : শনিবার আরও একটা ডার্বি ম্যাচ। ফুটবলকে কেন্দ্র করে বাঙালির মহারণ। ঘটি-বাঙালের এই লড়াই। যতই কলকাতার বাইরে হোক না কেন ডার্বি ম্যাচ নিয়ে সমর্থকদের উন্মাদনার কোনও ভাঁটা পড়বে না। এটাই বাঙালির আবেগের ফুটবল।
ইদানিং ডার্বি ম্যাচ নিয়ে অনেক কথা শুনি। এই দল এগিয়ে, এই দল পিছিয়ে, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু তাঁদের উদ্দেশে আমার একটাই কথা বলার আছে, সেটা হল, ডার্বি ম্যাচ সব সময়ই ফিফটি-ফিফটি। এই ম্যাচ ঘিরে নিজে যখন খেলতাম তখনও কোনও প্রেডিকসন করিনি। আর প্রাক্তন খেলোয়াড় হিসাবে এখনও করি না।
চলতি আইএসএল-মোহনবাগান ছন্দে আছে ঠিক কথাই। কিন্তু তাই বলে যদি কেউ ভেবে থাকেন, যে মোলিনার দল ডার্বিতেও ফেভারিট, তাহলে ভুল করবেন। প্রতিপক্ষ দলটা কিন্তু ইস্টবেঙ্গল। যদি তাঁরাও নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে পারে, তাহলে এই ডার্বি ম্যাচে মোহনবাগান যে সহজে জয় পাবে এমন কোনও কথা নেই। বরঞ্চ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। সেক্ষেত্রে যে দল সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে সেই দল শেষ হাসি হাসবে। কেননা এটা স্নায়ুর যুদ্ধের ম্যাচ। যাঁরা এই যুদ্ধে চাপ বজায় রেখে লড়াই করতে পারবে, তারাই শেষ হাসি হাসবে।
দুই দলেই কিন্তু ম্যাচ জেতানোর একাধিক ফুটবলার রয়েছেন। সুতরাং যে কেউ গোল করতে পারেন। মোহনবাগানকে যেমন ম্যাচ জেতার চাপ নিয়ে মাঠে নামতে হবে, ইস্টবেঙ্গল এই জায়গাতে অনেকটা ফ্রি মুডে খেলতে পারবে। ডার্বি ম্যাচ যদি ইস্টবেঙ্গল জিততে পারে, তাহলে মনে রাখতে হবে অস্কারের এই দলটাই কিন্তু পরবর্তী ম্যাচগুলোতে ভাল খেলার অক্সিজেনটা পেয়ে যাবে। তখন ইস্টবেঙ্গলকে আটকানো মুশকিল হবে। ম্যাচ জিতলেও বাগানকে ডিফেন্ডারদের আমি কিন্তু ফুলমার্কস কখনই দিতে পারব না। কেননা ওঁরাও কিন্তু গোল হজম করেছে। দিয়ামান্তাকস, বিষ্ণু, মহেশরা যদি নিজেদের সেরাটা দিয়ে মাঠে শনিবার ম্যাচে ঝাঁপাতে পারে, তাহলে ইস্টবেঙ্গলের জয় না পাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে সবটাই নির্ভর করবে খেলোয়াড়দের মানসিকতা ও কোচের কৌশলের ওপর।
লাল-হলুদ ডিফেন্ডারদের উদ্দেশে আমার একটাই বার্তা, এই ম্যাচে ফরোয়ার্ডরা গোল করলেও, গোল ধরে রাখার দায়িত্ব কিন্তু নিতে হবে ডিফেন্ডারদেরকেই। কেননা, হিজাজি-হেক্টরদের মারাত্মক কিছু ভুলের খেসারত এর আগের ম্যাচগুলিতে ইস্টবেঙ্গলকে দিতে হয়েছে। সেই কথা মাথায় রাখতে হবে ওঁদের। যাতে এই ধরনের সাধারণ ভুলগুলো যাতে এই ম্যাচে না হয়। তাহলেই বিপদ। কেননা, মোহনবাগানের স্ট্রাইকাররা কিন্তু দারুণ ছন্দে রয়েছে। আর একটা কথা, সেটা মাঝমাঠের দখল নেওয়া। যাতে কোনওভাবেই মনবীর, লিস্টনরা বল না পান। এই কাজটা করতে পারলে ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ না জেতার কোনও কারণ আমি দেখছি না। আবারও বলছি, যে সেরাটা দিতে পারবে, সেই শেষ হাসি হাসবে। তবে এই ম্যাচ কিন্তু সব সময়ই ফিফটি-ফিফটি।