ছাত্র বিনোদের সেই ব্যাটিং প্রতিভা আজও ভুলতে পারেননি বলবিন্দর
Balwinder still hasn't forgotten the batting talent of student Binod.

Truth Of Bengal: ১৯৮৩-র বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন বলবিন্দার সিং সান্ধু। কপিলদেবের বাহিনীর বিশ্বস্ত সৈনিক হিসাবে সেদিন তিনিও লর্ডসের মাঠে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে নিজের সেরাটা দিয়ে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন দেশকে। সেই ঘটনা আজ ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নিয়েছে।
খেলা ছাড়ার পর মুম্বই দলকে রঞ্জি ট্রফির কোচিংও করিয়েছিলেন সেদিনের এই শিখ তরুণ। কালের নিয়মে এখন আর তিনি তরুণ নেই। আগামী আগস্টেই ৭০-র ঘরে পদাপর্ণ করবেন বলবিন্দর। বিশ্বকাপ জয় নয়, তাঁর মনের মণিকোঠায় জমে থাকা বেশ কিছু অজানা তথ্যই তিনি শোনালেন আরো খবরের প্রতিনিধি সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে। আজ তার প্রথম পর্ব।
একটা সময় মুম্বইয়ের শিবাজী পার্কে প্রয়াত কোচ রামাকান্ত আচরেকারের দুই প্রিয় শিষ্য বলতে আমরা সকলেই জানতাম বিনোদ কাম্বলী ও শচীন তেন্ডুলকরকে। দুজনেই তখন আগামী দিনে ক্রিকেট প্রতিভার অগ্নি স্ফুলিঙ্গ। দ্রোণাচার্য কোচের হাতে তৈরি বলে কথা! সুতরাং এই দুই মারাঠি যুবকের প্রতিভা নিয়ে কোনও কথা না ওঠাটাই স্বাভাবিক ব্যাপার।
এরপর ধীরে ধীরে বিনেদ ও শচীনের প্রতিভায় মুগ্ধ হতে লাগল গোটা ক্রিকেটমহল। পরের ইতিহাসটা সকলেরই জানা। শচীন বিশ্ব বিখ্যাত হলেও, পারেননি বিনোদ। আরব সাগরের ঢেউয়ে চিরকালের মত ক্রিকেট থেকে হারিয়ে গিয়েছেন এক কালের প্রতিভাবান এই ক্রিকেটার। বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন বিনোদ। ক্রিকেট তাঁর জীবন থেকে বহু দূরে।
১৯৯৬-৯৮ সাল। মুম্বই দলের রঞ্জি ট্রফির কোচ হিসাবে কোচিংয়ের দায়িত্ব সামলেছিলেন বলবিন্দর। সেই সময়ই খেলোয়াড় হিসাবে মুম্বই দলে ছিলেন বিনোদ কাম্বলি। প্রথম দেখাতেই বিনোদের ক্রিকেট প্রতিভা মুগ্ধ করেছিল বলবিন্দরকে-ও। ভেবেছিলেন, ধরে রাখতে পারলে এই ছেলেটিই একদিন দাপিয়ে বেরাবে বিশ্ব ক্রিকেটের মেগা মঞ্চ।
না বিনোদ পারেননি। অসংযমী জীবন-যাপন বিনোদকে ক্রিকেট থেকে সরিয়ে দিয়েছে বহু দূরে। কিন্তু তাঁর খেলার স্টাইল, তাঁর ক্রিকেট প্রতিভা এখন যেন ভুলতে পারেননি সেদিনের মুম্বই দলের কোচ বলবিন্দর সিং সান্ধু।
সুদূর আমেরিকা থেকে টেলিফোনে বলবিন্দার বলেন, আমাদের পরবর্তী জেনারেশনের পর প্রতিভাবান ব্যাটার হিসাবে আমার কাছে বিনোদ-ই থাকবে সবার আগে। ওর ধারণা ছিল না কি জাতের ক্রিকেটার ছিল। খুব আফশোস হয়, ছেলেটা নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। কেন যে ও নিজেকে এই জায়গায় নিয়ে গেল, তা আমার জানা নেই। জানতেও চাই না। কেননা বিনোদের এই কর্মকাণ্ড আমাকে সব সময় ব্যথিত করে তোলে।
এর পর বিনোদের সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ হয়নি ঠিক কথাই। কিন্তু তাই বলে এই নয় যে, আমি ওকে ভুলে গিয়েছি। খারাপ লাগে বিনোদকে ওই অবস্থায় দেখতে। আমি চাইব এবার অন্তত বিনোদ ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠুক। যদি কোনওদিন দেখা হয়, তাহলে স্নেহের পরশে ভরিয়ে দিয়ে বলব, আর যেও না পথে।
যে পথ তুমি বেছে নিয়েছিলে। আশাকরি বিনোদ এবার অন্তত শুনবে আমার কথা। প্রিয় ছাত্র বিনোদ কথা শুনবেন কি না, তা জানেন না বলবিন্দর। তবুও ছাত্র ভাল থাকুক সেটাই প্রাক্তন কোচ হিসাবে চান বলবিন্দর।