অফবিট

আরজি কর কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার একজন সাইকোপ্যাথ, দাবি মনোবিদদের

Civic volunteer caught in RG Kar case is a psychopath, claim psychologists

Truth Of Bengal: ভিনগ্রহীদের সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠতে চাই। ‌ চাই যৌন সঙ্গম। একসময় ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন অস্ট্রেলিয়া পর্ন তারকা অ্যাঞ্জেলা হোয়াইট। পর্ন মহিলা তারকার এই বক্তব্য শুনলেই আপনিও বলতে পারেন ওনার যৌন বিকৃতি রয়েছে। ‘দুজন সুস্থ মানসিকতার মানুষ নিজেদের ইচ্ছাতেই যখন যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হন সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু এই ধরনের ক্ষেত্রে যদি একজন অন্যজনকে শারীরিক এবং মানসিক আঘাত দিয়ে আনন্দ পান তবে সেটা মোটেই স্বাভাবিক নয়।’ জানিয়েছেন মনোবিদ ডঃ অমিত চক্রবর্তী।

কলকাতার হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়ে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়েছিলেন এবং কথা বলেছেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। কলকাতা পুলিশ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে গ্রেফতার করে। সূত্রে জানা যায়, এই সিভিক ভলেন্টিয়ার ধর্ষণ ও খুনের কথা স্বীকার করেছেন। অন্যদিকে সিবিআই তদন্ত এগোতেই চমক দেওয়ার মত তথ্য উঠে এসেছে। গ্রেফতার হওয়া সিভিক ভলেন্টিয়ার অবলিলায় ধর্ষণ ও খুনের কথা স্বীকার করার পাশাপাশি এমন কিছু কথা জানিয়েছে যা তার যৌন বিকৃত রূপকে তুলে ধরেছে।

সূত্রের খবর, গ্রেপ্তার হওয়া সিভিক ভলেন্টিয়ার এর মোবাইলে পাওয়া গিয়েছে প্রচুর পরিমাণে পর্নোগ্রাফি। সব থেকে বড় ব্যাপার, সাধারণ যৌন মিলনের থেকে বিকৃত পর্নোগ্রাফিতেই আসক্তি ছিল তার। ‘এটা কি বলা হয় সেক্সুয়াল ডিভিয়েশন। সাধারণ যৌন মিলনের ক্ষেত্রে উভয়ের সম্মতি থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে থাকে একজনের ডোমিনেশন। যা অপরজনের ক্ষেত্রে মারাত্মক। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে অবশ্যই যৌন বিকৃতিকে পছন্দ করা একজন মানুষ।’ মনোবিদের পরিষ্কার বক্তব্য।

গ্রেপ্তার হওয়ার সিভিক ভলেন্টিয়ারের পশুর মত প্রবৃত্তি রয়েছে। নিয়মিত ‘রেড লাইট এরিয়া’তে যাতায়াত ছিল। ঘটনার আগে ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার যৌন পল্লী তে গিয়েছিল বলে জানা যায়। ধর্ষণ বা মহিলাদের উপরে অত্যাচার একটা সামাজিক ব্যাধি। সামাজিকভাবেই এর মোকাবিলা করা প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বার্তা দিয়েছেন।’ আরজি করের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার মানসিকতা, একজনকে যন্ত্রণা দিয়ে যৌন মিলন করা। অপরজন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। আর সেটা দেখতে ভালো লাগছে। এটা যৌন বিকৃতির এক অন্যতম রূপ’ জানালেন মনোবিদ ডঃ অমিত চক্রবর্তী।

তিনি আরো বলেন,’মানুষের প্রতি যাদের মায়া-মমতা থাকে না তাদের এই ধরনের মানসিক রোগ দেখা যায়। তারা সবসময় কোন মহিলাকে পণ্য হিসাবে দেখে। মহিলাদের ওপর অত্যাচার করতে ভালোবাসে।’ ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ারের পারিবারিক জীবন মোটেই ভালো নয়। স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি হাসপাতালের অন্যান্য মহিলারা কর্মীদের প্রতি খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। ‘

একটা মেয়েকে ধর্ষণ বা অত্যাচার করা শুধু নয় তার গলা কেটে ফেলা, মার ধর করা এটাও সেই ধরনের মানুষের আর একটা প্রবণতা। যেখানে শুধু তাকে ‘সেক্স অ্যাডিক্ট’ বলা যাবে না। অপরাধ মনস্ক মানসিকতা একসঙ্গে কাজ করে। আরজি কর কাণ্ডে তৃতীয় সিভিক ভলেন্টিয়ারের মানসিকতা তাই। এদের বলা হয় সাইকোপ্যাথ বা অ্যান্টিসোশ্যাল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার’ সাফ বক্তব্য মনোবিদের।

ইতিমধ্যেই আরজি করের ঘটনা নিয়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরে আন্দোলন হচ্ছে। সবাই অপরাধীর শাস্তি চাইছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এমন নিকৃষ্টতম ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দোষীর ফাঁসি চেয়েছেন। কিন্তু দেশের বিভিন্ন জায়গায় মহিলাদের ওপর ধর্ষণ ও নির্যাতনের একাধিক অভিযোগ দায়ের হচ্ছে। তার রুখতে কেন্দ্রীয় সরকার কড়া আইন বলবৎ করুক, এই মর্মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে মহিলাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে কঠিন আইন চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর রাজ্য গুলির চাপ সৃষ্টি চেয়েছেন। ‘এই ধরনের জঘন্যতম কাজে যারা যুক্ত তাদের অত্যন্ত কড়া শাস্তির মুখোমুখি হওয়া শ্রেয়’ জানিয়েছেন সংগীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়।

Related Articles