লাইফস্টাইল

ধনতেরাসে কেনাকাটা করার আগে কোন কোন বিষয় খেয়াল রাখবেন

Dhanteras

The Truth of Bengal,Mou Basu: নবরাত্রি আর দুর্গাপুজো শেষ হয়ে যাওয়ার পর গোটা দেশ উত্সুক হয়ে অপেক্ষা করে আলোর উত্সব দীপাবলির জন্য।ধনতেরাস অর্থাত্ ধনবর্ষা উত্সব। দীপাবলির আলোয় নিজের জীবন আলোকিত করার পাশাপাশি জীবনে যাতে ধন বা অর্থের কোনো অভাব না হয় তার জন্য ধনতেরাস উত্সব পালন করা হয়। দীপাবলি উৎসবের প্রথম দিন কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে সাড়ম্বরে উদ্যাপন করা হয় ধনতেরাস বা ধনত্রয়োদশী বা ধন্বন্তরি ত্রয়োদশী। সংসারের ধন, সমৃদ্ধি, সৌভাগ্য আর সুস্বাস্থ্যের কামনায় ধনতেরাসের দিন মালক্ষ্মীর পাশাপাশি ধনসম্পদের দেবতা কুবেরদেবকে পুজো করা হয়। ধনত্রয়োদশী বা ধনতেরাসের বিশেষ দিনটিতে মা লক্ষ্মী ও কুবেরদেবকে প্রসন্ন করার জন্য সোনা-রূপোর গয়না, বাসন বা মুদ্রা, অন্য ধাতু নির্মিত দ্রব্য কেনার চল আছে। পুরাণে বলা হয়েছে সমুদ্রমন্থনের সময় মালক্ষ্মীর সঙ্গে উঠে এসেছিলেন ধনসম্পদের দেবতা কুবেরদেবও। তাই ধনতেরাসের দিন মালক্ষ্মীর সঙ্গে কুবেরের পুজো করাকে শুভ বলে মানা হয়। সৌভাগ্য কামনায় বাসনকোসনের পাশাপাশি সোনার গিনি বা রুপোর কয়েন বা সোনা-রুপো বা হিরের গয়না কেনাকে শুভ বলে মানা হয়। মা লক্ষ্মীর সঙ্গে সমুদ্রমন্থনের সময় ধন্বন্তরী বা দেবকূলে যাঁকে চিকিৎসক বলে মানা হয় তিনিও উঠে এসেছিলেন। ধন্বন্তরিকে দেবতা বিষ্ণুর অবতার বলে মানা হয়। তাঁর হাতে থাকে অমৃতকলস। এদিন ধন্বন্তরী দেবের পুজো করা হয় শোকতাপ, রোগভোগ থেকে দূরে থাকতে।

ধনতেরাসের দিন অবাঙালিরা বাড়িতে রঙিন আল্পনা বা রঙ্গোলি আঁকেন। ঘরে ও বাড়ির চারিদিকে প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালান। বাড়ির বাইরে সারা রাত ধরে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা হয় অশুভ শক্তিকে তাড়াতে। অনেকে সন্ধ্যায় পুজোর সময় সাত রকমের শস্যদানা মালক্ষ্মীকে অর্পণ করেন। কেউ কেউ আবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উপোস করেন, মধু, দই, ঘি, দুধ আর মিষ্টি অর্থাৎ পঞ্চামৃত দেন দেবতার উদ্দেশ্যে। সমৃদ্ধি কামনায় এদিন লক্ষ্মী-গণেশের মূর্তি কেনা শুভ বলে মানা হয়। সোনা-রুপোর ধাতুর পাশাপাশি মাটির মূর্তি কেনাও শুভ। গয়নার পাশাপাশি সোনা বা রুপোর কয়েন কেনাও শুভ বলে মানা হয়। নতুন বাসনকোসন তা সংসারের জন্যই হোক কিংবা পুজোর বাসন তাও কেনা যেতে পারে। বিশেষত, কাঁসা-পেতলের বাসনকোসন কেনাকে শুভ বলে মানা হয়। ওইদিনটা বিশেষ করে নতুন কেনা বাসন পূর্ব দিকে রাখা দরকার।

ধনতেরাসের পুজোর আগে কোন কোন বিষয় খেয়াল রাখবেন—

ধনতেরাসের আগে পুরো বাড়ি খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হয়। এরপর ধনতেরাসের দিন পুরো বাড়ি রঙ্গোলী দিতে হয়। এছাড়াও লক্ষ্মী দেবীর পা আঁকতে হয়। এরপর নিজের মতো করে লক্ষ্মীদেবীকে পুজো করতে হয়।
প্রথমে একটি লাল রঙের কাপড় নিতে হয়। এরপর একটি ঘট বা বাটি নিতে হয়। মনে রাখতে হবে, এই পাত্রটি যেন ধনতেরাসের জন্য নতুন কেনা হয়। এরপরে ওই পাত্রের মধ্যে চাল দিতে হয়। এছাড়াও, পাঁচটি সুপারি এবং ২১ টি পদ্মবীজ দিতে হয়। সেই সঙ্গে আরও একটি ঘটিতে গঙ্গাজল ভরে, তারমধ্যে চিনি এবং সোনা বা রূপোর পয়সা দিতে হয়। আর জলের ওপরে ফুল বা মালা দিতে হয়।
প্রসঙ্গত, ঘরে যে লক্ষ্মী দেবী এবং গণেশের মূর্তি বা কয়েন আছে, তার ডানদিকে নতুন কেনা সোনা বা রূপোর গয়না রাখতে হবে। যদি নতুন কোনও গয়না না কিনে থাকেন, তাহলে পুরনো যে কোনও গয়না, মূর্তি বা কয়েনের পাশে রাখতে পারেন। কেউ কেউ টাকাও মূর্তির পাশে রাখেন। নতুন প্রদীপ জ্বালাতে হবে। মনে রাখবেন, প্রদীপ যেন টানা দুই ঘণ্টা ধরে জ্বলে। এছাড়াও ভগবানকে উৎসর্গ করে কিছু মিষ্টি এবং নৈবেদ্য দিতে হয়। ধনতেরাসের দিন অবাঙালিরা ঘরে ও বাড়ির চারিদিকে প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালান। বাড়ির বাইরে সারা রাত ধরে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা হয় অশুভ শক্তিকে তাড়াতে।

Related Articles