“আরজিকর কাণ্ডে” ভাইরাল হওয়া ‘শুভদীপ’ কে? চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনল কলকাতা পুলিশ
Who is 'Shubdeep' who went viral in "R.G.kar scandal"? Kolkata Police brought sensational information

Truth Of Bengal: বেশকিছুদিন ধরে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল ‘আরজিকর’ কাণ্ড নিয়ে। এমনকি এই কাণ্ডে নাম জড়িয়ে ছিল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের ছেলের নাম। এই কারনে তিনি সাংবাদিক বৈঠকে বসে কেঁদে ফেলে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আরজি কর কাণ্ডে তাঁর ছেলে পরিচয় দিয়ে একজনের ছবি ভাইরাল হয়। সেইখানে বলা হয় তিনি বিধায়ক সৌমেনের ছেলে। তাঁর নাম বলা হয় শুভদীপ সিংহ মহাপাত্র। তাঁর সঙ্গে একটি ছবিও দেওয়া হয়। এমনকি ভাইরাল হওয়া পোস্টে এটাও দাবি করা হয় যে, এই ছাত্র আসলে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রর ছেলে।
তিনি নাকি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজেরই ইন্টার্ন আর গত বৃহস্পতিবার ডাক্তার-মৃত্যুর পর থেকে তিনি উধাও। আর সেই পোস্ট যথারীতি ভাইরাল হয় সেই পোস্ট। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে উপচে পড়ে নেতিবাচক মন্তব্য। এই ছেলেটির বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এই গুজব ছড়িয়ে যাওয়ার পর রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রর ছেলে নন, তা সাংবাদিক বৈঠক করেই জানিয়ে দেন তিনি।
এমনকি তাঁর ছেলে কে, তার পরিচয় কী, সবটাই জানান তিনি। এই খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকে ওই ভাইরাল হওয়া পোস্টের ছেলেটি কে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে। কে এই শুভদীপ ছেলেটি? সে কি সত্যিই আর জি করের ছাত্র? যদি তাই হয়, তিনি কোথায় ? সত্যিই কি বেপাত্তা? ঘটনার সত্যাসত্য বিচার না করেই ঘৃণা ছড়াতে শুরু করে। অবশেষে সত্যি সামনে আনল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে একটি পোস্ট করা হয়। আর সেই পোস্টটি সত্যি গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের দাবি, সমাজমাধ্যমে ঘোরাফেরা করা নানারকম, ‘কিছু কিছু সময় কাল্পনিক পোস্ট সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। তবে সেই খবরটি সত্যি কি না তা বিচার করা হয় না।
পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয় হ্যাঁ, “ইনি সত্যিই শুভদীপ সিংহ মহাপাত্র। তিনি ওই হাসপাতালেরই একজন ইন্টার্ন। তবে তিনি নিখোঁজ নন। আর তিনি রাজ্যের কোনও মন্ত্রীর ছেলেও নন।“ অথচ, সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পোস্টে দাবি ছিল, ওই ছেলেটি নাকি কোন প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান বলেই নাকি তাঁকে আড়াল করা হচ্ছে। এমনকি শুভদীপের ছবি আগুনের মতো ছড়িয়ে যায় ফেসবুকে। ‘আসল দোষী’ হিসেবে। বসে যায় বিচারসভা। তবে তার সত্যাসত্য বিচার করেনি নেটিজেনরা। এবার আসি আসল ঘটনায়।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী “ শুভদীপের বাড়ি বাঁকুড়ায়। তার বাবার নাম প্রবীর সিংহ মহাপাত্র। প্রবীরবাবু প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। মধ্যবিত্ত এই পরিবারের সঙ্গে কোনও মন্ত্রীর কোনওরকম সম্পর্ক নেই। এবং, শুভদীপ নিখোঁজও নয়। ঘটনার দিন থেকে সে হাসপাতালেই ছিল। কোথাও যায়নি। কলকাতা পুলিশ তার সঙ্গে কথাও বলেছে তদন্ত চলাকালীন।“ কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে এহেন অনুরোধ করা হয় যে,”একটু ভেবে দেখতে অনুরোধ করি, কোনও কিছু না জেনে স্রেফ কল্পনা বা অন্য কোনও গভীর উদ্দেশ্য নিয়ে সাধারণ পরিবারের একজন তরুণ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এই প্রচার তার মনে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, কতটা সামাজিক অসম্মানের মুখে ফেলতে পারে তাকে এবং তার পরিবারকে।“
পুলিশের তরফে সতর্ক করা হচ্ছে যাঁরা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে মিথ্যে গুজব ছড়াচ্ছেন বা মনগড়া পোস্ট করছেন। সেই ‘সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার’দের রেয়াত করবে না কলকাতা পুলিশ। যারা এই গুজব ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এমনকি এই গুজব ছড়ানো ব্যক্তি বা পেজ-গুলির অ্যাডমিনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের তরফ থেকে এফআইআর করা হয়েছে।