বেসরকারি হাতে রেলের পার্সেল ভ্যান! প্রতিবাদে হাওড়ায় বন্ধ পার্সেল বুকিং, হয়রানি যাত্রীদের
Railway parcel vans in private hands! Parcel booking halted in Howrah in protest

Truth of Bengal: সোমবার সকাল থেকেই হাওড়া স্টেশনের পার্সেল বুকিং কাউন্টারগুলো ফাঁকা। নেই কোনও হাঁকডাক, নেই কোনও মাল ওঠানোর তাড়াহুড়ো। ভাঙা মন নিয়ে প্ল্যাটফর্মের এক কোণে বসে আছেন ছোট ব্যবসায়ী রহিমুদ্দিন। বললেন, “ফলকনামায় মাল পাঠাব, বলল বুকিং বন্ধ। এভাবে চললে সংসার চলবে কীভাবে?”
হাওড়া থেকে চলাচলকারী সমস্ত ট্রেনের ব্রেক ভ্যান বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ পার্সেল এজেন্টরা একযোগে সমস্ত বুকিং বন্ধ রেখেছেন। ফলে ট্রেন চলছে, কিন্তু পণ্য ওঠেনি। পূর্বা, ফলকনামা, যশবন্তপুর স্পেশাল-সহ অনেক ট্রেন পার্সেল ছাড়াই রওনা দিয়েছে।
রেলের এই নীতিতে ক্ষোভে ফুঁসছেন বহু এজেন্ট ও শ্রমিক। তাঁদের দাবি, এতদিন সামনের ব্রেক ভ্যান লিজে দেওয়া হলেও পেছনেরটি রেলের হাতে থাকত। কিন্তু এখন সেটিও ৮ মে থেকে লিজে দেওয়া হবে। এতে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ হারাবেন।
এজেন্ট ইরশাদ আলম বলেন, “আমরা কোনও হাঙ্গামা করছি না। কিন্তু রেলের এই সিদ্ধান্তে শুধু আমাদের নয়, সাধারণ মানুষেরও ক্ষতি হচ্ছে।”
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে হাওড়া-গুয়াহাটি রুটে প্রতি কেজি মাল পাঠাতে লাগত সাড়ে চার টাকা, এখন তা বেড়ে দাঁড়াবে ১২ থেকে ১৪ টাকা। এর প্রভাব পড়বে বাজারে, বাড়বে জিনিসপত্রের দাম।
রেল যদিও বলছে, এই সিদ্ধান্ত নীতিগত। ডিআরএম সঞ্জীব কুমার জানিয়েছেন, “পলিসি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে কী করা যায়।”
রেলের বক্তব্য, নিজস্ব বুকিংয়ে মালপত্র চুরির ঘটনা বাড়ছে, ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে। তাই বেসরকারি সংস্থার হাতে দায়িত্ব দিলে নিরাপত্তা ও ডেলিভারির সুবিধা বাড়বে।
তবু যাত্রীরা বলছেন, ভাড়া যদি এমন বেড়ে যায়, তাহলে ট্রেনে পণ্য পাঠানোই বন্ধ করতে হবে। একজন বলেন, “গরিব লোকজনের জন্য রেল, সেটাই তো ছিল। এখন সবই যদি ব্যবসা হয়ে যায়, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?”
রেলের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে এখন গোটা হাওড়ায় উদ্বেগের বাতাবরণ। বুকিং বন্ধ, ট্রলি দাঁড়িয়ে, শ্রমিক বসে—এক অনিশ্চয়তার অপেক্ষায় সবাই।