কলকাতা

১০৮ উপাদানে অভিষেক! আজ জগন্নাথদেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা, আরেক নীলাচলের সাক্ষী বঙ্গবাসী

Abhishek with 108 elements! Today is the inauguration of Lord Jagannath, Bengalis witness another Nilachal

Truth Of Bengal: আজ দিঘায় উদ্বোধন হতে চলেছে বহু প্রতীক্ষিত জগন্নাথ মন্দিরের। সমুদ্রের নোনা হাওয়া আর সোনালি বালুর মধ্যে যেন আরেক পুরীর আবির্ভাব—এই অনুভবেই আজ জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে দিঘার জগন্নাথ  মন্দিরের দরজা। পশ্চিমবঙ্গবাসীর বহুদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হতে চলেছে অবশেষে। মন্দিরে হবে জগন্নাথ দেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা।

প্রাণপ্রতিষ্ঠা মানে শুধু একটি মূর্তিতে প্রাণ সঞ্চার নয়—এ এক জটিল এবং পবিত্র আচার-অনুষ্ঠান। বেদ ও পুরাণ অনুসারে ধাপে ধাপে পালন করা হয় এর নিয়ম। প্রথম ধাপ ছিল শোভাযাত্রা, যেখানে মূর্তিকে মন্দিরের চারপাশে ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ভক্তদের এই ভ্রমণেই শুরু হয় মূর্তিতে প্রাণ সঞ্চারের সূচনা।

এরপর মন্দিরে ফিরে আসে মূর্তি। শুরু হয় মূল প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠান। মূর্তিকে স্নান করানো হয়, অভিষেকের জন্য ব্যবহার করা হয় ১০৮টি উপাদান—পঞ্চামৃত, ফুল, পাতার নির্যাস, আখের রস প্রভৃতি। সবশেষ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ—চক্ষুদান। সোনার সূচ ব্যবহার করে দেবতার চোখ আঁকা হয়। বিশ্বাস, এই সূচই দেবতার দৃষ্টিশক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রাণপ্রতিষ্ঠার আগে গতকাল, ২৯ তারিখ সকালবেলা আয়োজিত হয় মূল যজ্ঞ। যজ্ঞের পর সন্ধ্যায় ফুলের শয্যায় শয়ন করেন জগন্নাথ দেব। এরপর দেবতার শরীর সোনা, রূপা ও তামার তার দিয়ে জড়ানো হয়। সেই তার পুরোহিতের কোমরেও বাঁধা হয়।

প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে তিনটি ধাপে—ঘট, কুণ্ড এবং প্রতিবিম্ব। এই পবিত্র কাজে ওড়িশার পুরী থেকে বিশেষ পাণ্ডারা এসেছেন। কাঠের জগন্নাথ দেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করবেন তাঁরা। আর পাথরের জগন্নাথ ও রাধা-কৃষ্ণ বিগ্রহে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবে ইসকন।

আজকের দিনটা দিঘাবাসী ও সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে ঐতিহাসিক। একদিকে ভক্তির আবেগ, অন্যদিকে সমুদ্রের স্পর্শ—এই মন্দির হয়ে উঠছে বাংলার এক নতুন তীর্থভূমি।

Related Articles