কলকাতা

বাঙালি মেধার বিশাল স্বীকৃতি! মানববিদ্যায় ‘নোবেল’ পেলেন গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক

A huge recognition of Bengali talent! Gayatri Chakraborty Spivak receives the 'Nobel' in humanities

Truth Of Bengal: বিশ্বের তত্ত্ব ও দর্শনের জগতে ভারতীয় মেধার অন্যতম উজ্জ্বল প্রতিনিধি অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক চলতি বছরে নরওয়ের হলবার্গ পুরস্কার পাচ্ছেন। ‘আর্টস ও হিউম্যানিটিজের নোবেল’ বলে পরিচিত এই সম্মান আমেরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা গায়ত্রীর দীর্ঘ গবেষণা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি।

২০১৭ সালে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’শো বছর পূর্তি উপলক্ষে এক আলোচনায় মানববিদ্যার গুরুত্ব সম্পর্কে জোরালো মতামত দিয়েছিলেন অধ্যাপক গায়ত্রী। তিনি বলেছিলেন, “উচ্চশিক্ষায় হিউম্যানিটিজকে অনেক, অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার। মানববিদ্যা না থাকলে দেশের ভবিষ্যৎও শেষ।” এই মানববিদ্যার প্রতি তাঁর আজীবন সাধনা ও অবদানের ফলস্বরূপ এবার তিনি পেলেন জীবনের অন্যতম বড় সম্মান।

গত ১৩ মার্চ হলবার্গ পুরস্কার কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের নাম। আগামী ৫ জুন নরওয়ের বেরজেন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তাঁকে এই পুরস্কার তুলে দেবেন নরওয়ের যুবরাজ হাকোন। এই সম্মানের সঙ্গে রয়েছে প্রায় ৬.৫ কোটি ভারতীয় টাকা অর্থমূল্য।

হলবার্গ পুরস্কার কমিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে তুলনামূলক সাহিত্য, নিম্নবর্গের ইতিহাস, নারীবাদ, সামাজিক ও রাজনৈতিক তত্ত্ব ও দর্শন নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁর লেখনী ও অধ্যাপনার মধ্যে রয়েছে গভীর দার্শনিক অনুসন্ধান এবং প্রচলিত ধ্যানধারণাকে প্রশ্ন করার শক্তি। পুরস্কার কমিটির চেয়ারম্যান হাইকি ক্রিগার বলেন, “স্পিভাক পাশ্চাত্য চিন্তার মূল ধারা গ্রহণ করলেও তাঁর সমালোচনার ভঙ্গিতে রয়েছে ক্রমাগত প্রশ্ন করার ক্ষমতা। তিনি আধুনিক বিশ্বের কেন্দ্র ও প্রান্ত—দুটিকেই সমানভাবে স্পর্শ করেছেন।”

অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের এই বিরল সম্মান পাওয়ায় তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স (প্রাক্তন টুইটার)-এ তিনি লিখেছেন, “অধ্যাপক স্পিভাক সাহিত্যতত্ত্ব এবং দর্শনের ক্ষেত্রে বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছেন। তবে বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র মানুষের জন্য তাঁর স্বেচ্ছাসেবা আমাকে মুগ্ধ করেছে। বাংলা সাহিত্যের সেরা ধ্রুপদী রচনাগুলির অনুবাদের প্রতি তাঁর ভালোবাসা আমাদের অনুপ্রাণিত করে।”

গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের এই ‘নোবেল’ প্রাপ্তি শুধুমাত্র তাঁর ব্যক্তিগত কৃতিত্ব নয়, এটি বিশ্ব দরবারে ভারতীয় তথা বাঙালি মেধার এক বিশাল স্বীকৃতি। তাঁর এই সম্মানে বাংলা ও ভারত গর্বিত।