
The Truth of Bengal: শনিবার ১৮তম লোকসভা ভোটের নির্ঘন্ট প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন।কমিশনের এই ঘোষণার ফলে লাগু আদর্শ আচরণ বিধি। সারা দেশজুড়ে আদর্শ আচরণ বিধি কার্যকর হয়ে গেল।লোকসভার মতোই উড়িষ্যা,সিকিম,অরুণাচলপ্রদেশ,অন্ধপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের ব্যবস্থা করেছে কমিশন।
আসলে আদর্শ আচরণ বিধি কী ?
সারা দেশে নিরপেক্ষ,স্বচ্ছ ও অবাধ ভোটের জন্য কিছু নিয়ম সব দলকেই মানতে হয়।যার লক্ষ্য হল সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে সেই নিয়ম-নিগড়ে বেঁধে সুষ্ঠু ভোটদান নিশ্চিত করা। যেখানে স্পষ্টতই বলা থাকে রাজনৈতিক দলগুলো কী করতে পারবে আর কী করতে পারবে না।যেহেতু শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য কমিশন এই ভোট চলাকালীন সময় নজর রাখে তাই আচরণ বিধি মেনে চলার জন্য কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোকে বাধ্য করতে পারে। সংবিধাবের ৩২৪ নম্বর ধারা অনুসারে কমিশনের এই ক্ষমতা রয়েছে। প্রথম ১৯৬০সালে কেরলের বিধানসভা ভোটের এই আদর্শ আচরণ বিধি কার্যকর হয়।১৯৬০এর পর ১৯৬২সালেও দেশজুড়ে ভোটের সময় এই মডেল কোড অব কনডাক্ট লাগু হয়। তারপর ১৯৬৭তেও এই নির্বাচনী বিধি কার্যকর করার জন্য কমিশনের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। যতদিন না ভোট শেষ হবে ততদিন কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের কর্মচারীরা এই নির্বাচনী বিধি মানতে বাধ্য। যখন নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে তখন আর এই আদর্শ নির্বাচনী বিধি লাগু থাকবে না।
একনজরে দেখে নেব নির্বাচনী বিধিতে কী রয়েছে—
- কোনও মন্ত্রী এই ভোটের সময় সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন না।পারবেন না সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করতে। বিশেষ করে মন্ত্রীদের গাড়ি প্রচারের কাজে ব্যবহার করাই যাবে না।
- ভোট ঘোষণার পর জনগণের অর্থ কোনওভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা বেআইনি।ভোট ঘোষণার পর কোনও প্রকল্প ঘোষণা,কার্যকর করা বা প্রচারের উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো যাবে না। যদি কোনও সরকারি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যায়,তাহলে তা সম্পন্ন করা যেতে পারে।
- মন্দির,মসজিদ,গুরদুয়ারা বা উপাসনার স্থান ভোটের প্রচারের কাজে কোনওভাবেই ব্যবহার করা যাবে না।
- আদর্শ আচরণ বিধি লাগু হওয়ার পর কোনও সরকারি অফিসারকে বদলি,শাস্তি দান বা অন্যত্র পাঠানোর নির্দেশ জারি করতে পারবেন না মন্ত্রী বা সরকারের পদাধিকারীরা।একমাত্র কমিশনই এই বদলির নির্দেশ লাগু করতে পারে।
- কোনও দলের প্রচারের জন্য আগেভাগে স্থানীয় থানার অনুমতি নিতে হবে।অবশ্যই লাউডস্পিকার ব্যবহারে বিধি মেনে চলতে হবে।সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত এই প্রচারের লাউডস্পিকার ব্যবহার করতে পারবে প্রার্থী বা প্রার্থীর সমর্থনে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা।
- যদি কোনও রাজনৈতিক দলের প্রার্থী বা প্রচারকারীরা বিধিভঙ্গ করেন তাহলে কমিশন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ক্যাম্পেনারের ওপর লাগু করতে পারে শাস্তি। এমনকি যদি কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা লাগু হয়, তাহলে সেই প্রার্থীকে আইন অনুযায়ী কড়া ব্যবস্থার সুপারিশ করতে পারে কমিশন।প্রয়োজনে সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে কমিশনের।
- নাগরিকদেরও এই বিধি লাগু করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রয়েছে।প্রয়োজনে যেকোনও রাজনৈতিক দল বা দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কমিশনের কাছে আবেদন করতে পারেন ভোটাররা।
- ভোটারদের ভোটদানে বাধাদান বা ভীতি প্রদর্শনের জন্য কমিশন কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ দিতে পারে সংশ্লিষ্ট রাজ্য বা জেলার প্রশাসনের কর্তাদের।