
The Truth of Bengal: দেশ এ বেকারত্ব চরমে। অন্যদিকে বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার ধারেকাছেও পৌঁছনো যায়নি। তার উপর সরকারি চাকরির নিরাপত্তা সরাসরি কেড়ে নিয়েছে ‘অগ্নিপথ’-এর মতো প্রকল্প। কেন্দ্রের এধরনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে ভোটে ফায়দা পেয়েছে বিরোধীরা। লোকসভা নির্বাচনের আগে তাই চাপে পড়ে আবারও ভোলবদলের পথে মোদি সরকার। বিরোধীদের পালের হাওয়া কাড়তে ভাবনাচিন্তা চলছে বড় চমকের অগ্নিবীরদের স্থায়ীকরণ। জনগণের মন জয়ে মরিয়া কেন্দ্র শীঘ্রই এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলেই এখন জল্পনা সরকারি স্তরে। ২০২২ সালের জুন মাসে ঘোষণা হয়েছিল ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের। ১৭ বছর থেকে ২৩ বছর বয়সিদের জন্য সামরিক বাহিনীতে এই নিয়োগ মাত্র চার বছরের। তাঁদের নামই অগ্নিবীর। সম্পূর্ণ সময়সীমার চাকরি, পেনশন, অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কিছুই পাবেন না তাঁরা। চার বছরে হাতে পাবেন মোট সাড়ে ১১ লক্ষ টাকা। সঙ্গে বিমা। মেয়াদ শেষে সেনায় চাকরির সুযোগ পাবেন মাত্র ২৫ শতাংশই।
গত দেড় বছর ধরে এই অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বস্তুত প্রতিটি রাজ্যের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস ও বিরোধীরা তিনটি ইস্যুকে পাখির চোখ করেছে অগ্নিবীর, জাতপাতের সেন্সাস এবং পুরনো পেনশন প্রথা ফিরিয়ে আনা। তিনটিই জনগণের কাছে যথেষ্ট স্পর্শকাতর ইস্যু। ফলে সরাসরি বিরোধিতা করতে পারছে না বিজেপি। তাই শোনা যাচ্ছে, এবার সেব্যাপারে ভোল বদলে বিরোধীদের অস্ত্র ভোঁতা করে দিতেই আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী। আর সেই তালিকায় প্রথম নাম ‘অগ্নিপথ’। তবে শোনা যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে রাখা হবে কিছু শর্ত। তার মধ্যে অন্যতম, পরীক্ষা! চার বছর পর অগ্নিবীরদের ২৫ শতাংশকে ভারতীয় সেনায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা ছিল। বিক্ষোভের চাপে ইতিমধ্যেই তা বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।
সূত্রের খবর, তাঁদের বাছাই করতে পরীক্ষার শর্ত রাখতে চলেছে সেনা। চলতি মাস থেকেই চালু হয়েছে আগামী বছরের জন্য অগ্নিবীর নিয়োগের প্রক্রিয়া। মোট ৪৬ হাজার জনকে নেওয়া হবে এই অর্থবর্ষে। এ পর্যন্ত নিয়োগের সংখ্যা ৩৯ হাজার। দু’টি ব্যাচের প্রশিক্ষণ চলছে। সেনা জানিয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যে অগ্নিবীরদের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ১ লক্ষ ৭৫ হাজারে। ২০৩২ সালে সেনার অর্ধেকই হবে অগ্নিবীর। তাতেও নিশ্চিন্ত থাকতে পারছে না কেন্দ্র। কারণ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ এবং দক্ষিণ ভারত থেকে সেনাবাহিনীতে আবেদন করার প্রবণতা বিপুল। এর মধ্যে বিহার ও উত্তরপ্রদেশে অগ্নিপথ নিয়ে রীতিমতো আগুন জ্বলেছিল। হিমাচল প্রদেশে অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে কংগ্রেস ভোটে ফায়দাও লুটেছে। তার উপর রয়েছে পুরনো পেনশন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার মতো ইস্যু, যা নিয়ে একপ্রকার কোণঠাসা কেন্দ্র তথা বিজেপি।