দেশ

পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম মেট্রোঃ১,০০০কিলোমিটার যাত্রাপথ ছুঁয়ে গেছে দেশের ১১রাজ্য,২৩টি শহর

Metro systems have transformed travel in India

Truth of Bengal: ভারতের গণপরিবহণের ইতিহাসে মেট্রো, বৈচিত্র্যের মানচিত্রকে সংহত করেছে। একসময় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এই মেট্রো-কে পাতাল রেল বলে উল্লেখ করেছিলেন। এখন সেই পাতাল রেলই একের পর এক রাজ্যে যোগাযোগের যোগসূত্র গড়ে চলেছে। বেড়ানোর গতিপথকেও আলাদা মাত্রা দিয়েছে। উল্লেখ্য, মেট্রো ১,০০০কিমি এলাকাকে সংযোজিত করেছে।যার মাধ্যমে আসলে ১১টি রাজ্যও ২৩টি শহর একসূত্রে বাঁধা পড়েছে।বর্তমানে যাত্রীরা দ্রুত,সহজতর ও আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য মেট্রোকেই বেছে নেয়। যার ফলে পৃথিবীর তৃতীয় মেট্রো নেটওয়ার্ক হয়ে উঠেছে ভারতীয় মেট্রো। মেট্রো এখন শুধু ঘুরে বেড়ানোর জন্য নয়,এই মেট্রোই জানান দেয়,কিভাবে আমরা বাস করছি,কিভাবে শহরগুলো এগিয়ে চলেছে।

দ্রুত, নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য ভ্রমণের ভবিষ্যত

৫ জানুয়ারি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মেট্রোর শ্রীবৃদ্ধির ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা করেন। যার মাধ্যমে মেট্রো আরও শক্তিশালী ও প্রগতিশীল হয়ে উঠেছে। তিনি দিল্লিতে মোট ১২,২০০কোটি টাকার প্রকল্পের সূচনা করেন।যার মধ্যে রয়েছে দিল্লি –গাজিয়াবাদ-মিরাট নমো ভারত করিডর, এই নব নির্মিত প্রকল্পের মাধ্যমে দিল্লি-মিরাট যোগাযোগ আরও সহজতর হয়েছে।  এর সঙ্গে আবার প্রধানমন্ত্রী দিল্লি মেট্রোর ফেজ –ফোর পরিষেবারও উদ্বোধন করেন। এই যাত্রাপথের দূরত্ব হল ২.৮ কিমি। যার ফলে পশ্চিম দিল্লির মানুষ উপকৃত হবেন। একইসঙ্গে রিথালা কুন্দলি বিভাগে ২৬.৫ কিমি মেট্রো পথেরও সমন্বয় বিধান করা হয়েছে।যার ফলে দিল্লি –হরিয়ানা একসূত্রে বাঁধা পড়েছে।

ওপরের ওই সমস্ত প্রকল্পগুলো গণ-পরিবহণের ক্ষেত্রে আলাদা মাইলস্টোন হয়ে উঠেছে। বর্তমানে এই মেট্রোর মাধ্যমে দূরদূরান্তে যাতায়াত খুবই সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে।বর্তমানে ১কোটি যাত্রীকে পরিষেবা দেয় পাতাল রেল। এই ধরণের বৃদ্ধির জন্য ২০২২সালে জাপানকে অতিক্রম করে ফেলেছে আমাদের প্রিয় দেশ।এখন সারা বিশ্বের যোগাযোগ মানচিত্রে ভারতের মেট্রো নেটওয়ার্ক নজর কাড়ছে। বিশ্বের মধ্যে ভারত হল তৃতীয় স্থানে। আর যদি মেট্রো নেটওয়ার্কের ভিত্তিতে লক্ষ্য করা যায়,তাহলে ভারতের মেট্রো দ্বিতীয় বৃহত্তম।

ভারতের মেট্রোর ইতিহাসের মাইলস্টোন

আসলে করিডরও মেট্রোর সুড়ঙ্গ ভারতের নগরকেন্দ্রিক যাতায়াতের গতিপথকে নতুন রূপ দিয়েছে। এই মেট্রোর যাত্রাপথ শুরু হয়েছিল এক দশক আগে। ১৯৬৯ সালে একটি মেট্রোপলিটান পরিবহণ পরিকল্পনার মাধ্যমে এই মেট্রোর যাত্রাপথ শুরু হয়। তারপর প্রায় ২দশক লেগেছে সেই স্বপ্নের সুড়ঙ্গ যাত্রাকে সাকার করতে।

মেট্রো ব্যবস্থার উন্নতি

শুধু ভূমির উপর পরিবহণের সংযোজনই নয়,উদ্ভাবনী নানা পদ্ধতিতে এই পরিবহণের মাণোন্নয়ন করা হচ্ছে।যার মাধ্যমে ভবিষ্যত ভারত উপকৃত হবে। নদীর নীচের টানেল থেকে চালকবিহীন ট্রেন,ওয়াটার মেট্রো থেকে হরেক অত্যাধুনিক ব্যবস্থা কার্যতঃ আধুনিক নগর পরিবহণকে শক্তিশালী ও চলমান করে তুলছে।

 জলের নীচে মেট্রো

২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথম জলের নীচের মেট্রো পরিষেবার সূচনা করেন। সেই মেট্রোপথে জুড়ে যায় এসপ্লানেড-হাওড়া ময়দান। গঙ্গার নীচ দিয়ে সেই পরিষেবা ইতিহাস তৈরি করেছে।এর মাধ্যমে ভারত প্রমাণ করেছে এদেশের স্থাপত্য বিদ্যার বিকাশ কোন পর্যায়ে গেছে।

চালক বিহীন মেট্রো

২০২০-র ২৮ ডিসেম্বর ভারতে সর্বপ্রথম চালকবিহীন মেট্রোর সূচনা হয়। দিল্লির মাগেনটা লাইনে এই স্বয়ংক্রিয় গণপরিবহণ ব্যবস্থার সংযোজন হয়।

পরিশেষে বলা যায়,শুধু দেশে নয়,বিদেশেও ভারতীয় মেট্রোর নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে দেওয়ার ভাবনা নেওয়া হচ্ছে।বাংলাদেশে এই পরিষেবা যাতে যায় সেজন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।কলকাতা মেট্রোয় যে ধরণের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কার্যকর লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে বলাই যায়,আগামীদিনে নতুন নতুন ভাবনা এই মেট্রোর ইতিহাসে নতুন কোনও অধ্যায় তৈরি করবে।

Related Articles